কলকাতা: বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতা বৈঠকে আজ মিলল না রফাসূত্র।


সূত্রের খবর, ১৩০টি আসনে লড়তে চায় কংগ্রেস। অন্যদিকে, আসন ধরে ধরে আলোচনার পক্ষপাতী বামেরা। আজকের বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র উঠে আসেনি। তবে বিজেপি-তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের প্রশ্নে সহমত দু’ পক্ষই।


এদিন আসন সমঝোতা নিয়ে বৈঠকে বসেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। বামেদের তরফে ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।


গতকালই তৃণমূল-বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করে বাম-কংগ্রেস। 'রাজ্যে বিজেপিকে এনেছে তৃণমূলই!' আলাদা আলাদা সভা থেকে দাবি অধীর চৌধুরী ও সূর্যকান্ত মিশ্রর। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের মুখেও এবার ভাইপো কটাক্ষ!


সামনেই ২১-এর হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচন। একদিকে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। আর অন্যদিকে বাংলাকে পাখির চোখ করা বিজেপির ২০০ আসনে জেতার হুঙ্কার! এরই মাঝে ভোটের মুখে তৃণমূল-বিজেপিকে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াল বাম-কংগ্রেস।


পাল্টা আক্রমণের পথে হেঁটেছে রাজ্যের শাসকদলও। দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, তৃণমূল কখনই বিজেপিকে আনেনি। বামেরা এনেছে। অধীর আগে নিজের দলকে ঠিক করুন।


শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে সভা ছিল কংগ্রেসের। সেখান থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়ান অধীর চৌধুরী। প্রদেশ সভাপতি বলেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কাছে পকেট মারের মতো। ২০১১ তে তৃণমূল তো আমাদের দাক্ষিণ্য নিয়েই ক্ষমতায় এসেছিলোআপনি মুসলিমদের জন্য সমস্যা তৈরি করেছেন। এখন আপনার আর মুসলিমদের কথা মনে পড়ছে না? এখন বিজেপির থেকেও আপনি বেশি হিন্দু সাজতে চাইছেন। এখন হিন্দুদের ভোটে আপনি ভাগ বসাতে চাইছেন। জবাবে সৌগত রায় কটাক্ষের সুরে বলেন, আমাদের দাক্ষিন্যে কংগ্রেস অল্পকিছু সিট পেয়েছিল।


অন্যদিকে কলকাতার সভা থেকে তৃণমূল-বিজেপির আঁতাঁতের অভিযোগ তোলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। বিজেপির পর এবার সূর্যকান্ত মিশ্রর মুখেও শোনা গেল ভাইপো কটাক্ষ। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, গরু ছাগল ছাড়া কেউ বিক্রি হয় না। হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে কটা বাড়ি? মালিক কে? আগে ছিল? প্রধানমন্ত্রী বলছেন সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এতদিন তো নেওয়া হয়নি। তাহলে তো ইনি জেলে থাকতেন। রাজ্যপালের সঙ্গে চা খেতে গেলেন কেন? চা চক্রে গিয়ে ভাইপো মামলার কথা হয়েছে?


বামেদের এই অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। সৌগত রায় বলেন, সুজন চক্রবর্তী বলে আগে তৃণমূলকে রুখতে হবে, তারপরে বিজেপিকে রুখবো। আগে রাম পরে বাম বলেছিল কর্মীদের। এই কথা শুনে যে সমস্ত বাম কর্মী বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল তারা বলছে আর মামি ফিরব না আর আমি থাকবো।


বাম ও কংগ্রেস, দু’দলই এদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর সপ্তমে নিয়ে গিয়েছে। আর এই প্রেক্ষাপটেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আসন সমঝোতা নিয়ে রবিবার বৈঠকে বসছে দু’পক্ষ।


কংগ্রেস সূত্রে খবর, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড। বলা হয়েছে, সংখ্যা নয়, যে আসনগুলিতে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলির ওপর জোর দেওয়া।