গতকালই হাওড়ার ডুমুরজলায় যোগদান মেলায় সরকারিভাবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল, বৈশালী ডালমিয়া, প্রবীর ঘোষালের মতো একঝাঁক তৃণমূলত্যাগী নেতা। সরকারিভাবে যোগদানের আগের দিনই অবশ্য তাঁরা বিশেষ বিমানে উড়ে গিয়েছিলেন দিল্লি। অমিত শাহের বাসভবনে গিয়ে গেরুয়া উত্তরীয় গলায় চাপিয়ে বিজেপি যোগের জল্পনার নিরসন করেছিলেন। আর দিল্লি পাড়ির আগে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে তৃণমূল সরকারের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘বিশেষ সম্মান দেখিয়ে বিমান পাঠিয়েছেন অমিত শাহজি।’
প্রথমে কথা ছিল রবিবার ডুমুরজলায় অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেবেন তৃণমূলত্যাগী একাধিক নেতা। কিন্তু শুক্রবার সন্ধেয় দিল্লির ইজরায়ের দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণের জেরে বাতিল হয়ে যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দুদিনের বঙ্গসফর। তারপরই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পাঠানো হয় বিশেষ বিমান।
মাঝে একঝাঁক নেতার দলবদল নিয়ে কোনও কথা না বললেও এদিন উত্তরবঙ্গ সফরে তা নিয়ে মুখ খোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-র উদ্দেশ্যে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়ে তিনি জোড়েন লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের দূরাবস্থার প্রসঙ্গও।
গতকাল সরকারিভাবে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানোর পরই আগের দলের প্রতি আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে কোনও কথা না বললেও তৃণমূল দলের উদ্দেশ্যে ঝাঁঝালো ছিল তাঁর আক্রমণের ভাষা।
শুধু তাই নয়, গত বৃহস্পতিবার বিধানসভায় গিয়ে বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে হাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও গাড়িতে তিনি বসার সময় সেই ছবি ছিল গাড়ির ব্যাকসিটে, আর রাজীব ছিলেন সামনের আসনে।
দিল্লি যাওয়ার বিমানে ওঠার আগে পর্যন্ত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুকে প্রোফাইলে উজ্জ্বল ছিল ‘বাংলার গর্ব মমতা’ স্লোগান। যদিও যা বদলে গিয়েছিল কিছুক্ষণের মধ্যেই।
রাজীবের ‘মমতা’-ত্যাগ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছিলেন, ‘রাজীব পুরোটাই নাটক করছেন।’ যদিও বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছিলেন, ‘মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে অনেক আগেই।’
দলবদলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যে মানসিক দূরত্ব বেড়েছে, সেটা বলাই বাহুল্য। এবার ভোটমুখী বঙ্গে পারদ আরও একটু চড়িয়ে নাম না করে ‘চোর’ তকমা দিলেন প্রাক্তন দলনেত্রী।