বিটন চক্রবর্তী, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও অরিত্রিক ভট্টাচার্য, পূর্ব মেদিনীপুর: বিধানসভা ভোটের হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রামে হেভিওয়েটদের লড়াইয়ে তিনিও যে ‘কম-ওয়েটে’র নন, মনোনয়নপত্র জমা দিয়েই তা জানিয়ে দিলেন সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী!
এদিন মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায় বললেন, চুরিতে হেভিওয়েট, দুর্নীতিতে হেভিওয়েট, মানুষ খুনে হেভিওয়েট। অন্যদিকে খেটেখাওয়া মানুষ।
কথায় বলে, ‘মর্নিং শোজ দ্যা ডে’! ভোটের ময়দানে তিনি নবাগতা হলেও, রাজনীতির ময়দানে নন। নন্দীগ্রামের ব্যাটলগ্রাউন্ডে মুখোমুখি মমতা-শুভেন্দু।
এই দু’জনকে টক্কর দিতে সংযুক্ত মোর্চার তরফে সিপিএমের টিকিটে নন্দীগ্রামে লড়বেন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়।
অর্থাত লড়াই এবার পুরোদস্তুর ত্রিমুখী। সেই উত্তাপ আরও বাড়িয়ে শুক্রবার নন্দীগ্রামের সংযুক্তের মোর্চার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র পেশ করলেন সিপিএমের মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়।
এদিন, হলদিয়ার গিরিশ মোড় থেকে মিছিল করে, হলদিয়ার মহকুমা শাসকের দফতরে যান মীনাক্ষি। সঙ্গে ছিলেন, কংগ্রেস ও আইএসএফ-এর কর্মী সমর্থকরাও। সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী বলেন, খেটে খাওয়া মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য বিকল্প সরকার গড়তে হবে।
দীর্ঘদিন ধরে নন্দীগ্রামে প্রার্থী দেয় বাম শরিক সিপিআই। এবারের ভোটে শোনা যাচ্ছিল বামেরা আসনটি শরিক আইএসএফকে ছাড়তে পারে।
কিন্তু, শেষ অবধি বড়সড় চমক দিয়ে নন্দীগ্রাম থেকে লড়াকু তরুণী নেত্রী মীনাক্ষিকে প্রার্থী করে সিপিএম। আর এর নেপথ্যেই তৃণমূল-সিপিএম আঁতাত দেখছেন শুভেন্দু অধিকারী।
তিনি বললেন, আগে কংগ্রেসের সঙ্গে কমিউনিস্টদের লড়াই চিল। তারপর তৃণমূলের সঙ্গে কমিউনিস্টদের লড়াই হয়। আর এখন ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে সবার লড়াই। নন্দীগ্রামে সিপিএমের প্রার্থী কে ঠিক করে দিল? তৃণমূল।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফ নন্দীগ্রামে প্রার্থী দিলে, সংখ্যালঘু ভোট ভাগাভাগির ফলে তৃণমূলের ক্ষতি ও বিজেপির লাভের সম্ভাবনা ছিল।
উল্টোদিকে বিগত লোকসভা ভোটে নন্দীগ্রামে বিজেপির ভোট বৃদ্ধির নেপথ্যে, বামেদের ভোট গেরুয়া শিবিরে চলে যাওয়া অন্যতম কারণ ছিল বলে মত পর্যবেক্ষকদের।
কারণ, মূলত নন্দীগ্রামে শুভেন্দুকে ধাক্কা দিতেই বামেদের বহু ভোট বিজেপিতে গেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু, এখন সেই শুভেন্দুই বিজেপিতে চলে যাওয়ায়, বিজেপির দিকে চলে যাওয়া ভোট ফিরে আসার স্বপ্ন দেখছে সিপিএম।
বামেদের একাধিক আন্দোলনে এরকম ভাবেই সামনের সারিতে লড়াই করতে দেখা গেছে কুলটির সাদামাটা মেয়েটাকে। সেই মীনাক্ষিই এবার বিধানসভা ভোটে পাখির চোখ করছে নন্দীগ্রামকে। তিনি কোনও চমক দেখাতে পারেন, কি না, তার উত্তর মিলবে ২ মে।