কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা যোগ দিলেন তৃণমূলে। এদিন তৃণমূল ভবনে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও ডেরেক ব্রায়েনের উপস্থিতিতে যোগদান করেন বাজপেয়ী জমানার অর্থমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের পাশাপাশি প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন যশবন্ত সিন্হা। তৃণমূলে যোগদানের পর তিনি জানান, দেশ অদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্র এখন বিপদের মুখে।
দেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠান এখন দুর্বল। এখন দুর্বল দেশের বিচারব্যবস্থাও। বিজেপিত্যাগী নেতার অভিযোগ, স্বেচ্ছাচার চালাচ্ছে মোদি সরকার। এই সরকারকে বাধা দেওয়ার মতো কেউ নেই।
মোদি-শাহ দিল্লি থেকে যা করছেন, তা দেশবাসী বরদাস্ত করবে না। শুধু বাংলায় নয়, দেশের ভবিষ্যতের পক্ষে এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেন বাজপেয়ী জমানার অর্থমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ২০২৪-এ পরিবর্তনের সূচনা হবে বাংলা থেকেই।
এবিপি আনন্দর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে অকপট প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী---
প্রশ্ন- তৃণমূলে যোগ দিলেন কেন?
উত্তর- উত্তরে আমার পাল্টা প্রশ্ন হবে, তৃণমূল নয় কেন? আজ বাংলায় নির্বাচন হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি সহ একাধিক দল এই নির্বাচনে জোর লড়াই করছে। আমার বিশ্বাস, বাংলার ভোটের প্রভাব গোটা দেশে পড়বে। দেশে বিজেপিকে আটকানো জরুরি। তাই বাংলায় বিজেপিকে আটকানো জরুরি। এর জন্য এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত মজবুত করা জরুরি। তাই আমি আজ মমতার হাত শক্ত করতেই তৃণমূল কংগ্রেসে সামিল হয়েছি, যাতে তারা পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে ক্ষমতায় ফেরে।
প্রশ্ন- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কী কথা হয়েছে?
উত্তর- আমরা পরস্পরকে বরাবর সম্মান করে এসেছি। আমার তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তিনি খুশি। তিনি আমাকে শুভেচ্ছা জানান। জানিয়েছেন, একসঙ্গে কাজ করতে পেরে তিনি খুশি।
প্রশ্ন- নন্দীগ্রাম নিয়ে কী কথা হয়েছে?
উত্তর- নন্দীগ্রাম নিয়ে মমতার বক্তব্য স্পষ্ট। তিনি আগেও জানিয়েছেন, সেখানে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। না হলে এধরনের চোট আসত না। শুধু পায়ে নয়, শরীরের অন্যান্য জায়গাতেও চোট লেগেছে। গাড়ির দরজায় ধাক্কা মেরে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। ফলে, তাঁর গোটা শরীরে চোট লেগেছে।
প্রশ্ন- আপনি কি তৃণমূল প্রার্থী হতে চান?
উত্তর- এই মুহূর্তে এমন কোনও সম্ভাবনা নেই।
প্রশ্ন- কেন চাইছেন না?
উত্তর- আমি এখানে কোনও পদের লোভে আসিনি। আমার মনে হয়েছে, তৃণমূল তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরুক, এটাই এখন দেশের দাবি। আর তাতে আমি আমি যোগ দিতে এসেছি।
প্রশ্ন- অটলবিহারী বাজপেয়ী ও নরেন্দ্র মোদি জমানার পার্থক্য কোথায়?
উত্তর- বাজপেয়ীজি ঐকমত্যে বিশ্বাসী ছিলেন। মোদিজি জিততে পছন্দ করেন। বাজপেয়ীজি সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে পছন্দ করতেন। মোদিজি সকলকে ফেলে চলতে পছন্দ করেন। মোদি যে 'সবকা সাথ সবকা বিশ্বাস' আওয়াজ তোলেন, তা আখেরে সিবিআই কা সাথ, ইডি কা বিশ্বাস-এ পরিণত।
প্রশ্ন- নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয় বলে কেন মনে হচ্ছে আপনার?
উত্তর- কারণ, বর্তমানে তারা স্বাধীন নয়।