খড়গপুর (পশ্চিম মেদিনীপুর):  খড়গপুরের সভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে অল-আউট আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদি। একসুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী। 


মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বাংলার মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার অভিযোগ তোলেন মোদি। বলেন, বাংলার মানুষ আপনাকে ১০ বছর দিয়েছিল, কিন্তু দিদি ১০ বছরে আপনি মানুষকে কুশাসন দিয়েছেন।  


প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য তোষণ করে চলেছেন মমতা। বলেন, বেকার যুবক-যুবতীদের ১০ বছর কেড়ে নিয়েছেন দিদি। 


খড়গপুরের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করতে নরেন্দ্র মোদি হাতিয়ার করলেন সিন্ডিকেট-দৌরাত্ম্যের অভিযোগকে।  বললেন, দিদির পাঠশালায় সিলেবাস কাটমানি। দিদির পাঠশালায় সিলেবাস সিন্ডিকেট। দিদির পাঠশালায় উৎপীড়ন এবং অরাজকতার ট্রেনিং দেওয়া হয়। 


এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। বলেন, এখানে কেন্দুপাতা বিক্রি করতেও কাটমানি দিতে হয়। বাংলা থেকে এই কাটমানি সিস্টেম দূর করতে হবে। আমরা বাংলায় শুধু পদ্ম ফোটাতে চাই না। বাংলার মানুষের উন্নয়ন করতে চাই।’


গতকাল রাতে একসঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক ও ইস্টাগ্রাম বসে গিয়েছিল বেশ কিছুক্ষণ। এদিন এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে কটাক্ষ করেন মোদি। একেবারে, রাজ্যের ভূতপূর্ব ও বর্তমান শাসককে এক নিঃশ্বাসে আক্রমণ করেন। বলেন, কাল রাতে ৫০-৫৫ মিনিটের জন্য ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ হয়ে যায়, সবাই অধীর হয়ে উঠেছিলেন, বাংলায় ৫০-৫৫ বছর ধরে উন্নয়নই বন্ধ হয়ে আছে। কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল উন্নয়ন বন্ধ করে রেখেছে। 


মমতার পাশাপাশি, এদিন মোদির নিশানায় ছিলেন অভিষেকও। বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে বিজেপি যে অস্ত্র বেছে নিয়েছে, শনিবার ফের তার সদ্ব্যবহার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। খড়গপুরের সভা থেকে আবার তিনি সরব হয়েছেন ভাইপো ইস্যুতে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশ এখন সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেমে চলছে। বাংলায় অন্যরকম সিঙ্গল উইন্ডো। ভাইপো উইন্ডো। কী সিঙ্গল উইন্ডো? লোকেরা বলছে ভাইপো উইন্ডো। কী সিঙ্গল উইন্ডো? লোকেরা বলছে ভাইপো উইন্ডো।


বিরোধীদের আক্রমণের পাশাপাশি, দলের সৈনিকের মনোবলও বাড়াতে উদ্যোগ  নেন মোদি। এদিন খড়গপুরের সভা থেকে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ভূয়সী প্রশংসা করেন। 


একসময় এই খড়গপুর সদর থেকে জিতেই বিধায়ক হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। এবার সেখানেই প্রচারে এসে দিলীপ ঘোষকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদি। প্রশংসা করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতির সাহসিকতা থেকে নেতৃত্বদানের ক্ষমতার!


মোদি বলেন, আমাদের সৌভাগ্য দিলীপ ঘোষের মতো নেতা পেয়েছি। দিদির হুমকিতে ভয় পাননি দিলীপ। ভয়, হামলা সত্ত্বেও মাটি কামড়ে পড়ে আছেন। বাংলার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ দিলীপের। আপনারা কংগ্রেস, বাম, তৃণমূলকে দেখেছেন। একবার আশীর্বাদ দিন, আসল পরিবর্তন আনবে বিজেপি।