সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: গাছের প্রাণ রয়েছে, সেই কবে প্রমাণ করে গিয়েছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু, কিন্তু কে জানত ভোটমুখী বঙ্গে রাজনৈতিক তরজার ইস্যু হয়ে উঠবে গাছ! অশোকনগরে যশোর রোডের ধারে গাছের মধ্যে পেরেক পুঁতে পোস্টার লাগানো নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে বিতর্ক।
পোস্টার লাগিয়ে প্রচারে নেমেছে শাসকদলের নেতারা, অভিযোগ এমনটাই। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল যুব নেতা। অবশ্য তা নিয়ে নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি।
এর আগে ৪০০-৫০০ বছরের পুরনো গাছ কেটে যশোর রোড সম্প্রসারণ করতে চেয়ছিল সরকার। কিন্তু পরিবেশপ্রেমীদের আন্দোলনের জেরে তাতে ছেদ পড়ে। মামলা চলে কলকাতা হাইকোর্টেও। কিন্তু তারপরও টনক নড়েনি। এবার গাছের মধ্যে পেরেক পুঁতে লাগানো হয়েছে পোস্টার। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে যশোর রোডের দুধারে এ ধরণেরই অসংখ্য ছবি।
যশোর রোডের ধারে বড় বড় মেহগনি গাছে পোস্টার লাগিয়ে প্রচারে নেমেছে শাসকদলের নেতারা। শুধু রাজনৈতিক পোস্টরই নয়, লাগানো হয়েছে বিভিন্ন সংস্থার বিজ্ঞাপনও। এরই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা।
পরিবেশপ্রেমী বঙ্কিম চক্রবর্তী জানান, ‘‘এতে গাছের জীবনী শক্তি কমে যায়। বাইরের জল ঢুকে গাছে পচন ধরে। কোনো রাজনৈতিক দলের উচিত নয় মহামূল্যবান গাছগুলির ক্ষতি করা। এর বদলে গাছে দড়ি ঝুলিয়ে পোস্টার লাগানো যেতে পারে। ’’
অশোকনগর মানিকতলায় বেশ কিছু পোস্টারে সৌজন্যে নাম রয়েছে তৃণমূল যুবনেতা প্রদীপ সিংহের। যদিও তাঁর দাবি, তিনি না কি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না! স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতা প্রদীপ সিংহ জানান, ‘‘অশোকনগর এই পোস্টারের কথা জানি না। হয়তো কর্মী সমর্থকরা লাগিয়েছেন। তবে শুধু তৃনণমূল নয় অন্য দলও এমন প্রচার করে।’’
যথারীতি ভোটের মুখে গাছ ঘিরেও এখন রাজনীতি! বারাসাত সাংগঠনিক জেলার বিজেপি ওবিসি মোর্চা সভাপতি নীলরতন মিত্র জানান, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে পরিবেশপ্রেমী বলে দাবী করেন অথচ তাঁর দলের নেতারা মুখ্যমন্ত্রী ছবি মূল্যবান গাছে পেরেক দিয়ে পুঁতছেন। এদের কথায় আর কাজে মিল নেই।’’
সবমিলিয়ে যশোর রোডের ধারে পেরেক পুঁতে পোস্টার লাগানো ঘিরে এখন জোর রাজনৈতিক তরজা।