সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও ভ্যাকসিন না পাওয়ায় বারাসাতে ভোটকর্মীদের বিক্ষোভ। ভোটকর্মীদের অভিযোগ, গতকাল বারাসাত সদর হাসপাতালে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও ভ্যাকসিন মেলেনি। আজও লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করার পর, ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভোটকর্মীরা। সুপারের ঘরের সামনে চলে বিক্ষোভ। চাপের মুখে স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, কো-উইন অ্যাপের মাধ্যমে নয়, সরাসরি ভ্যাকসিন দেওয়া হবে ভোটকর্মীদের।
গতকাল, সোমবার তৃতীয় পর্যায়ে বয়স্কদের টিকাকরণের প্রথম দিনই মুখ থুবড়ে পড়েছিল কোউইন অ্যাপ। রাজ্যে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায়, বেশিরভাগ মানুষই করোনার ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করতে পারেন নি।
অ্যাপ নিয়ে দিনভর নাকাল হতে হয় সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ, স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নাম নথিভুক্ত করেন। তবে দেখা যায় স্ত্রীয়ের নাম উঠলেও স্বামীর নাম ওঠেনি ৷ পূ্র্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া জানান, কো-উইন অ্যাপ ক্র্যাশ করে গিয়েছিল ৷
গোটা দেশের মতো এরাজ্যেও দ্বিতীয় পর্যায়ের করোনা ভ্যাক্সিন দেওয়া শুরু হয়েছে। এই পর্যায়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে ৷ ৬০-এর বেশি বয়সীদের এবং কো-মর্বিডিটি রয়েছে, এমন ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের।
স্বস্তির এই ছবিটা সার্বিক হতে পারত। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় কো-উইন অ্যাপের প্রযুক্তিগত ত্রুটি। ষাটোর্ধ্ব এবং কো-মর্বিডিটি যুক্ত পঁয়তাল্লিশ-ঊর্ধ্বদের করোনার ভ্যাকসিন নিতে হলে কো-উইন অ্যাপের মাধ্যমে নাম রেজিস্ট্রশন বাধ্যতামূলক।
প্রথমে ঠিক ছিল বেলা ১২টার পর কোউইন অ্যাপে নাম রেজিস্ট্রেশন হবে। কিন্তু, সকাল ৯টা থেকেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, ঘণ্টাখানেক ঠিকঠাক কাজ করার পরেই কো-উইনের সার্ভার ক্র্যাশ করে যায়।
আপাতত সরকারি এবং বেসরকারি, দুই হাসপাতালেই হচ্ছে করোনার টিকাকরণ। বেসরকারি হাসপাতালে ২৫০ টাকা দিয়ে যাঁরা ভ্যাকসিন নিতে চান, এদিন তাঁরাই মূলত নাম নথিভুক্ত করছিলেন। মোবাইলে প্রযুক্তিগত ভাবে যাঁরা সড়গড় নন, তাঁদের বলা হয়েছিল সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে সরকারি হাসপাতালে গেলেই হবে। কিন্তু সার্ভার বিভ্রাটের কারণে সরকারি এবং বেসরকারি, দুই হাসপাতাল থেকেই ভ্যাকসিন না নিয়ে ফিরে আসতে হয় অনেককে। পূ্র্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া বলেন, কো-উইন অ্যাপ ক্র্যাশ করে গিয়েছে ৷
রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাননি, তা সত্ত্বেও কোউইন অ্যাপে প্রাপকের নাম নথিভুক্ত রয়েছে, এমন অভিযোগও সামনে এসেছে এদিন। দ্বিতীয়বার চেষ্টা করতে গেলে তা আর সম্ভব হয়নি। তবে যাঁরা নাম নথিভুক্ত করতে পেরেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই টিকা পেয়েছেন। এদিকে, বেসরকারি হাসপাতালে আবার দেখা দিয়েছে সিরিঞ্জ-সমস্যা। কোভিশিল্ড বা কোভ্যাকসিন দিতে গেলে, বিশেষ সিরিঞ্জের প্রয়োজন হয়। যা কলকাতায় খোলা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না।
এই পর্যায়ে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিকাকরণ চলবে।