রুমা পাল, কলকাতা: উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন শহরে আসার আগেই বড় সিদ্ধান্ত কমিশনের। কোভিড আবহে এবার ভোট কর্মীদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে । বুথের সংখ্যা যেমন ৭৮ হাজার ৯০৩ থেকে বেড়ে ১ লাখ ১ হাজার ৯১৬ হয়েছে। এমন অবস্থায় সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রচুর ভোট কর্মীর প্রয়োজন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকে জেলায় সংশ্লিষ্ট দফতরে ভোট প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ না করতে পারার জন্য প্রচুর আবেদনপত্র জমা পড়েছে। কিন্তু কমিশনের বক্তব্য কেন ভোট প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না তার সঠিক এবং উপযুক্ত কারণ দর্শাতে না পারলে সেই ভোট কর্মীকে সাসপেন্ড করার অধিকার রয়েছে কমিশনের। 


এবারে আরও একটি নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। রিটার্নিং অফিসারদের অনলাইনে লিখিত পরীক্ষার জন্য বসতে  হবে। পরীক্ষা নেবে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট। ২০ নম্বরের এই পরীক্ষা। আইনী এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা কেমন রয়েছে রিটার্নিং অফিসারদের মধ্যে তা যাচাই করার জন্য এই পরীক্ষা। এই পরীক্ষা হবে পার্ট-এ পার্ট-বি-তে। হাইপ্রোফাইল নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত। কোন বিধানসভা কেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিবার্চন কর্মকর্তার কাছে ৷ আইনি এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা রয়েছে কিনা তা দেখতেই এই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। কেন এই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত?  নির্বাচন কমিশন লক্ষ্য করেছে যে আইনি এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা না থাকার জন্য অনেক সময়েই নির্বাচন সংক্রান্ত কাজকর্মে দেরি হয়ে যায় ৷ এমনকি, নির্বাচন সংক্রান্ত সম্যক ধারণা স্পষ্ট না থাকার জন্য এই দেরি অনেকটাই নির্বাচন পদ্ধতিতে প্রভাব ফেলে, এমনটাই সূত্রের  খবর। রিটার্নিং অফিসাররা যারা মূলত বিডিও এবং এসডিওরা হন। সরাসরি জেলার নির্বাচনী আধিকারিক বা জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট করেন। শুধু পরীক্ষা দেওয়া নয় পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। ফেল হলে আবারও ট্রেনিং করতে হবে। ৩৫০ জন রিটার্নিং অফিসাররা এখন ট্রেনিং নিচ্ছে।


বৃহস্পতিবার সুদীপ জৈন সঙ্গে বৈঠকের আগে এদিন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব এবং অন্যান্য আধিকারিকরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সমস্ত জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। উপ নির্বাচন কমিশনের কাছে কোন প্রশ্নের উত্তর যাতে অধরা না থেকে যায় তা নিয়েই হয় এই বৈঠক।


এবারে ভোট প্রচারে স্টার ক্যাম্পেনারদের সংখ্যা কমানো হয়েছে । কমিশনের এমনটাই নির্দেশ। কোনও স্বীকৃত রাজনৈতিক দল আগে সর্বোচ্চ ৪০ জন স্টার ক্যাম্পেনারদের ভোট প্রচারে ব্যবহার করতে পারত এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩০ জন। স্বীকৃত নয় এমন রাজনৈতিক দল ভোট প্রচারে স্টার ক্যাম্পেনারদের ব্যবহার করত সর্বোচ্চ ২০ জন ৷ কিন্তু এবার তা কমে হয়েছে ১৫। কোভিড আবহে এমনই সিদ্ধান্ত।


বৃহস্পতিবার সমস্ত জেলার এসপি এবং ডিএম-দের নিয়ে উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ  জৈনের  বৈঠক হবে ৷ তবে তার আগে বুধবার রাতেই শহরে পা রাখছেন তিনি।