পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া:  একদিকে দুর্নীতির অভিযোগ। অন্যদিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ।  বিদায়ী বিধায়ককে প্রার্থী না করায়, ক্রমেই চওড়া হচ্ছে তৃণমূলের ফাটল। 


ফের নিজের দলের বিরুদ্ধে সরব হলেন বাঁকুড়ার বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক শম্পা দরিপা।


২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল নেত্রী ও বাঁকুড়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শম্পা দরিপা টিকিট না পেয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। তাঁকে টিকিটও দিয়েছিল কংগ্রেস। সদ্য অন্য দল থেকে এসেও, ভোটে জয়লাভ করেন জোট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী শম্পা দরিপা। 


১ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থীকে। কিন্তু ভোটে জেতার কয়েক মাসের মধ্যেই তৃণমূলে ফিরে যান। যদিও এবার বাঁকুড়ায় তাঁকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল।  তাঁর জায়গায় অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে  প্রার্থী করেছে দল।


তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক। দলের একাংশের বিরুদ্ধে তুলেছেন দুর্নীতির অভিযোগ। তিনি বলেছেন, আমি যদি থাকি বাঁকুড়া পুরসভায় যে লুঠপাট চলছে, তা হবে না। সেই কারণেই আমাকে চায় না। বাংলা যখন নিজের মেয়েকে চায়, বাঁকুড়ারও দাবি ঘরের মেয়েকেই চায়। বাইরের প্রার্থীকে তারা চাইছে না। 


বিক্ষুব্ধ বিধায়ককে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। মুখপাত্র দিলীপ আগরওয়াল বলেন, উনি এখন দলবিরোধী কথা বলছেন। বাঁকুড়ার 'পালস্ নাকি উনি ভালো বোঝেন'। তা যদি বোঝেন তাহলে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করে জিতে আসুন। তৃণমূলের প্রতীক ছিল বলে শম্পা দরিপা এই জায়গা পেয়েছে।


পাল্টা বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক শম্পা বলেন, আমার দাদু রেভারেণ্ড সি.সি পাণ্ডে। বাবা প্রবীর কুমার পাণ্ডে ভিয়েতনাম যুদ্ধে রেডক্রসের প্রতিনিধি হিসেবে গিয়েছিলেন। আমি সেই পরিবারের মেয়ে। তাই শম্পা দরিপাকে সে নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে গৌরবময় পুরনো ইতিহাস জানা উচিৎ।


সোনালি গুহ, জটু লাহিড়িদের পথে হেঁটে এখনই বিজেপিতে যাওয়ার কোনও কথা ঘোষণা করেননি শম্পা দরিপা। তবে তাঁর সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের কথার লড়াই দেখে বাড়তি অক্সিজেন পাচ্ছে গেরুয়া শিবির। বাঁকুড়া  বিজেপি প্রার্থী নীলাদ্রি দানা বলেন, তৃণমূল কোন রাজনৈতিক দল নয়, একটা এনজিও। ঐ দলে একটাই পোষ্ট, বাকি সব ল্যাম্প পোষ্ট। তাই আদি তৃণমূলীরা এখন সবাই বিজেপিতে। তৃণমূলের ব্যাপারে তাঁরা উৎসাহিত নন। মাঠে খেলা হবে ও জনগণ আমাদের সঙ্গেই আছেন।


নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়বেন, না কি ফের দলবদল করবেন? শেষমেশ কী করেন শম্পা দরিপা, এখন সেটাই দেখার।