পার্থপ্রতিম ঘোষ, হাওড়া: দিল্লির চাণক্যপুরীর এক পাঁচতারা হোটেল থেকে গ্রেফতার করার পর আজ হাওড়ায় নিয়ে আসা হল জগাছার বাসিন্দা, প্রতারণায় অভিযুক্ত শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আপাতত তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জগাছা থানায়। দিল্লির এক পাঁচতারা হোটেল থেকে শুভদীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই অফিসার পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। তাঁর স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করে স্বামীর পরিচয় ফাঁস করেছেন। ধৃতকে তিনদিনের ট্রানজিট রিমান্ড দিয়েছে দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্ট। আজ ধৃতকে হাওড়া আদালতে তোলা হবে।
সিবিআই কেন্দ্রীয় কর্মীবর্গ মন্ত্রকের অধীনস্থ। এই মন্ত্রকের অফিস দিল্লির নর্থ ব্লকে। নিজের সিবিআই অফিসার পরিচয়কে বিশ্বাসযোগ্য করতে রীতিমতো এই নর্থ ব্লকের সামনে দাঁড়িয়েই ছবি তুলেছিলেন প্রতারণায় অভিযুক্ত শুভদীপ। রবিবার রাতে দিল্লির চাণক্যপুরীর এক পাঁচতারা হোটেল থেকে যাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কখনও সিবিআই অফিসার, কখনও রেলের ভিজিল্যান্স অফিসার পরিচয় দেওয়া, কেন্দ্রীয় সংস্থায় চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, নীলবাতি লাগানো গাড়িতে যাতায়াত, এরকম একাধিক অভিযোগ রয়েছে শুভদীপের বিরুদ্ধে। সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে বিয়েও করেছিলেন এই কীর্তিমান। স্ত্রী স্বামীর বুজরুকি ধরে ফেলে পুলিশে অভিযোগ করেন। মামলা করেন বিবাহ বিচ্ছেদের। শুভদীপ বাড়ি ছেড়ে পালান।
রবিবার এবিপি আনন্দের প্রতিনিধির সামনে ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন শুভদীপের মা। তখন এই যুবক বলেন, ‘বিহারের বাসিন্দা লালনের পাল্লায় পড়েছিলাম। আমার কাজ ছিল ইন্টারভিউ নেওয়া। ইন্টারভিউ নিতাম অনলাইনে। লালন অনলাইনে টাকা দিত। আমি ক্ষমা চাইছি। মা আমাকে বাঁচাও। মেয়েটাকে খুশি করার জন্য ভুয়ো সিবিআই অফিসারের পরিচয় দিয়েছিলাম। আমি জাল সিবিআই-এর পরিচয়পত্র তৈরি করেছিলাম। নীলবাতি লাগিয়েছিলাম নোনোপুকুর ট্রামডিপো থেকে। আমার পরিচিত একজন ছিল। গাড়ি ভাড়া করতাম। দিনে ৩ হাজার ভাড়া নিত। পরিচিত একজন করে দিত।’
এরপর শুভদীপ তাঁর মাকে জানান, তিনি দিল্লিতে রয়েছেন। এরপর রাতেই জগাছা থানার পুলিশের এক বিশেষ দল দিল্লিতে পৌঁছে পাঁচতারা হোটেল থেকে গ্রেফতার করে তাঁকে। গতকাল দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্টে তোলা হয় ধৃত শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিচারক তাঁকে ৩ দিনের ট্রানজিট রিমান্ড দিয়েছেন।