হাওড়া: ট্রেনে মোট আসনের অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়ে রাজ্যে চালু হতে পারে লোকাল ট্রেন!প্রথম ধাপে ১০-১৫ শতাংশ ট্রেন চলতে পারে।চূড়ান্ত রূপরেখা নিয়ে বৃহস্পতিবার ফের বৈঠকে বসবে রাজ্য সরকার ও রেল কর্তৃপক্ষ। সোমবার নবান্নের বৈঠকে এই সিদ্ধান্তই হয়েছে।

মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,  সমস্ত কোভিড নিয়ম মেনেই ট্রেন চালানো হবে। কীভাবে ট্রেন চলবে, কতগুলো চলবে, কটা গ্যালপিং ট্রেন চলবে, জিআরপি কীভাবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করবে, এগুলো নিয়ে রেল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। ৫ তারিখ আমরা ফের বৈঠকে বসব। স্যানিটাইজার, মাস্কিং দূরত্ববিধির মতো নিয়ম বাধ্যতামূলক।

পূর্ব রেল আধিকারিক বলেছেন,  আমরা শুরুতে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ট্রেন চালু করতে চাই। তারপর ধীরে ধীরে তা ২৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হবে।

রাজ্যে সাধারণ যাত্রীদের জন্য শেষবার লোকাল ট্রেন চলেছিল ২৪ মার্চ।

তারপর শুধুমাত্র রেলকর্মীদের জন্য স্পেশাল ট্রেন চালানো হচ্ছিল!

লকডাউন উঠলেও, সংক্রমণের আশঙ্কায় সবার জন্য লোকাল ট্রেন চালু করা যায়নি।

এরইমধ্যে লোকাল ট্রেন চালু করার জন্য জায়গায় জায়গায় শুরু হয়েছে বিক্ষোভ!

শনিবারের পর সোমবারও স্টাফ স্পেশালে উঠতে দেওয়ার দাবিতে যাত্রী বিক্ষোভ শুরু হয় হাওড়া স্টেশনে। বাধা দেয় রেল পুলিশ ও জিআরপি। খানিক্ষণ দু’পক্ষের বচসা চলে। তারপর নিত্যযাত্রীদের সেখান থেকে হঠিয়ে দেয় পুলিশ।

বৈদ্যবাটিতেও বিক্ষোভের একই ছবি দেখা দেয়।

এরইমধ্যে নবান্নে লোকাল ট্রেন নিয়ে রেল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে বৈঠক শেষ হয়।

মুখ্যসচিব  বলেছেন, গড়ে ট্রেনে ১২০০ জন যাত্রী বসতে পারে। তার পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে কীভাবে ট্রেন চালানো যায় তার চেষ্টা চলছে।

লোকাল ট্রেন চালু নিয়ে, সোমবার নবান্নে প্রায় এক ঘণ্টার উপর বৈঠক হয় রাজ্য সরকার, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের মধ্যে। কিন্তু, প্রশ্ন হল, লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রেও কি মেট্রোর মতো ই-পাস চালু করা হবে? সেই সম্ভাবনা কার্যত নেই বলেই ইঙ্গিত মিলেছে মুখ্যসচিবের কথায়।

তিনি বলেছেন, ট্রেনে সবার কথা মাথায় রাখতে হবে। কোনও বৈষম্য করলে চলবে না। মেট্রোয় অনেকে পরিষেবা বৃত্তের বাইরে থেকে গেছে। লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রে এমনটা হলে ছোট শহর-গ্রামের ক্ষেত্রে বৈষম্য হবে। তাই অন্য বিকল্প খুঁজতে হবে।

পরিসংখ্যান বলছে,  করোনার জেরে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হওয়ার আগে,হাওড়া স্টেশনে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ লক্ষ যাত্রী এবং শিয়ালদা স্টেশনে প্রতিদিন গড়ে ১২ লক্ষ যাত্রীর চাপ সামলাতে হত।

আপাতত ১০ থেকে ১৫ শতাংশ লোকাল ট্রেন চালু হলে, যাত্রী সংখ্যার অর্ধেককে ওঠার সুযোগ দেওয়া হলে, কীভাবে এই বিপুল চাপ সামলানো যাবে সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকে যাচ্ছে! অর্ধেকের বেশি যাত্রীকে লোকাল ট্রেনের বেশি উঠতে দেওয়া হবে না, এই সিদ্ধান্ত কীভাবে কার্যকর করা যাবে? আবার ট্রেন বন্ধ থাকায় যে অসংখ্য মানুষকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, সেটাও চরম বাস্তব! সেইসঙ্গে করোনা সংক্রমণও রোধ করতে হবে! সব মিলিয়ে রেলের কাছে এটা এক বড় চ্যালেঞ্জ।

শেষমেশ কবে এবং কীভাবে চালু হবে লোকাল ট্রেন, বৃহস্পতিবারই তা চূড়ান্ত জানা যাবে।

দ্রুত লোকাল ট্রেন চালাতে চায় রাজ্য সরকার। নবান্নে রেলের সঙ্গে  বৈঠকে এমনই প্রস্তাব রাজ্যের।

কোন কোন বিধি মেনে চলবে লোকাল ট্রেন?

রেলের সঙ্গে বৈঠকে একাধিক প্রস্তাব রাজ্য সরকারের

‘জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে চালু হোক ট্রেন’

কোভিড প্রোটোকল মেনে চালু হোক ট্রেন’’

কীভাবে লোকাল ট্রেন চালু, ৫ নভেম্বর চূড়ান্ত বৈঠক

কোন স্টেশনে কোন ট্রেন দাঁড়াবে, তা নিয়ে বৈঠক

সব স্টেশনে সব ট্রেন দাঁড়াবে না

কিছু ট্রেন গ্যালোপিং থাকবে

বসেই যেতে হবে ট্রেনে

৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে লোকাল চালানোর প্রস্তাব রেলের

একটি লোকালে ১২০০-র বদলে ৬০০ যাত্রীর ভাবনা রেলের

১০ থেকে ১৫ শতাংশ লোকাল দিয়ে শুরু করতে চায় রেল

তারপরে ২৫ শতাংশ লোকাল চালানোর প্রস্তাব রেলের

লোকালে দাঁড়িয়ে যাওয়ার সংস্থান রাখছে না রেল ---

সব স্টেশনে লোকাল ট্রেন না দাঁড় করানোর প্রস্তাব ---

‘মাস্ক, স্যানিটাইজেশন, থার্মাল স্ক্রিনিং, সামাজিক দূরত্ব’ --

এই ৪টি বিষয় মেনে লোকাল চালানোর প্রস্তাব রাজ্যের ---

উল্লেখ্য, রাজ্যে সাধারণ যাত্রীদের জন্য শেষবার লোকাল ট্রেন চলেছিল ২৪ মার্চ। লকডাউনের পর আনলক পর্ব শুরু হওয়া সত্ত্বেও লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু করা যায়নি করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায়।

এরইমধ্যে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনগুলিতে উঠতে চেয়ে বিভিন্ন স্টেশনে বিক্ষোভ বিগত কিছুদিন ধরেই চলছে।এরইমধ্যে এদিন লোকাল ট্রেন পরিষেবা ফের শুরু করা নিয়ে বৈঠকে বসে রাজ্য ও রেল।