কলকাতা: রাজ্যে ভোট-পরবর্তী হিংসার অভিযোগের ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি)-র রিপোর্ট নিয়ে হাইকোর্টে কড়া জবাব রাজ্যের। আদালতকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করেছে মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ দল। মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ দল পক্ষপাতদুষ্ট। এই দল রাজ্য সরকার বিরোধী। দলের সদস্যদের বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। মানবাধিকার কমিশনের দলে বেছে বেছে নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্য সম্পর্কে নেতিবাচক রিপোর্ট দেওয়ার জন্যই নিয়োগ। মিথ্যা সাক্ষ্য সংগ্রহের জন্য দল গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। দলের থাকা-খাওয়া বাবদ রাজ্যের খরচ প্রায় ৮ লক্ষ টাকা।’
রাজ্যে ভোট পরবর্তী অশান্তির অভিযোগ নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। রিপোর্টের কড়া সমালোচনা করে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, তাঁর সরকার শপথ নেওয়ার পর হিংসার ঘটনা ঘটেনি।
এর আগে কয়েকদিন আগে কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে রিপোর্টকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেন রাজ্যের আইনজীবী। পাল্টা মামলাকারীর আইনজীবীর অভিযোগ, রাজ্যে গুজরাত হিংসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।ওইদিনের শুনানিতে ৫ বিচারপতির বেঞ্চে রাজ্যের তরফে সওয়াল করেন অভিষেক মনু সিংভি। মামলাকারীর পক্ষে অংশ সওয়াল করেন মহেশ জেঠমালানি।
আদালত সূত্রে খবর, অভিষেক মনু সিংভি অভিযোগ করেন, এনএইচআরসি-র রিপোর্টে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। ভোটের আগের ঘটনারও উল্লেখ রয়েছে। এনএইচআরসি-র মতো নিরপেক্ষ সংস্থার কাছে এটা কাম্য নয়। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রিপোর্ট।
আদালত সূত্রে খবর, মহেশ জেঠমালানির পাল্টা দাবি করেন, রাজ্যে গুজরাত হিংসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অবিলম্বে নিরপেক্ষ সংস্থা দিয়ে তদন্ত প্রয়োজন। যে পুলিশ আক্রান্তদের ভয় দেখাচ্ছে, তারা তদন্ত করবে কেন?
এই মামলায় ফের শুনানি হবে ২৮ জুলাই। বলা হয়েছিল, রাজ্য সহ কেউ এই মামলায় হলফনামা জমা দিতে চাইলে দিতে হবে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে।
গত ১৫ জুলাই হাইকোর্টে জমা পড়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট। আদালত সূত্রে খবর, সেই রিপোর্টে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। আছে শাসকের আইন। পাশাপাশি, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশও করে কমিশন।