মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: বারবার লক গেট বিপর্যয় এড়াতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে দুর্গাপুর ব্যারেজে শুরু হল সংস্কার।
তার জেরে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতি রাতে বন্ধ থাকবে সেতু। রাত এগারোটা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত দুর্গাপুর ব্যারেজের ওপর দিয়ে জরুরি পরিষেবার গাড়ি ছাড়া কোনও যান চলাচল করবে না।
সেচ দফতর ও বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংস্কারের কাজ চলায় বৃহস্পতি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতি রাতে বন্ধ থাকবে সেতু।
রাত ১১টা থেকে ভোর ৪টে অবধি দুর্গাপুর ব্যারেজের ওপর দিয়ে কোনও যান চলাচল করবে না। ছাড় দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র অ্যাম্বুল্যান্স ও দমকলকে।
এর ফলে ৬ দিন রাতে রানিগঞ্জ হয়ে যেতে হবে বাঁকুড়ায়। তার জন্য প্রায় ৫০ কিলোমিটার রাস্তা বাড়তি ঘুরতে হবে।
সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার গৌতম বসু বলেন, ট্রাফিকের সঙ্গে যোগসূত্র রক্ষা করে চলছে সেচ দফতর। অসুবিধা হবে, কিন্তু কিছু উপায় নেই। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ট্রাফিক কন্ট্রোল।
দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম দুর্গাপুর ব্যারেজের এই সেতু। আবার দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান বা বীরভূম থেকে বাঁকুড়া ও দুই মেদিনীপুরে যেতে হলে দুর্গাপুর ব্যারেজ অন্যতম লাইফলাইন।
জেলার সেচ দফতর সূত্রে খবর, ১৯৫২ সালে শুরু হয় দামোদরের ওপর সেতু নির্মাণের কাজ। ১৯৫৫ সালে শুরু হয় সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল।
নিয়ম অনুযায়ী, ৬০ বছর পর সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করা সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা থাকলেও ৬৬ বছর পর এই নিয়ে দ্বিতীয়বার তা হচ্ছে।
বয়সের ভারে জীর্ণ দুর্গাপুর ব্যারেজের ওপর দিয়ে প্রতিদিন এই সেতুর ওপর দিয়ে ৭ থেকে সাড়ে ৭ হাজার ভারী গাড়ি যাতায়াত করে। ২০১৭ সালের নভেম্বরে ব্যারেজের ১ নম্বর লকগেট ভেঙে যায়। ঠিক তার তিন বছরের মাথায় গত অক্টোবরে ব্যারেজের ৩১ নম্বর লকগেট ভেঙে বড় বিপত্তি ঘটে।
বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি এড়াতে তাই এবার পুরোপুরি বদলে ফেলা হবে ১৭ ও ২২ নম্বর লকগেট। ৩৪টি লকগেটের মধ্যে ১৭টি লকগেট মেরামত করবে সেচ দফতর।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বন্ধ করা হয় সেতুর উপর যান চলাচল। ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত দুর্গাপুর ব্যারাজের সেতুর ওপর বন্ধ রাখা হয় যান চলাচল।