সোমনাথ দাস, চন্দ্রকোনা: সাইকেল নিয়ে বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরছেন তিনি। কখনও কথা বলছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। জানতে চাইছেন তাঁদের সমস্যার কথা। কখনও খোঁজ নিচ্ছেন একশো দিনের কাজের। কখনও আবার রাস্তার ধারের দোকানে সময় কাটাচ্ছেন। খাচ্ছেন চা-ও। একেবারেই অচেনা তিনি। একজন অচেনা-অজানা মানুষকে হঠাৎ করে নিজের কষ্টের কথা জানাতেও কুন্ঠাবোধ করছেন। অনেকে আবার তাঁর পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়ে প্রশ্নও করে বসছেন। গ্রামবাসীর এহেন মন্তব্যে ওই ভদ্রলোক ঈষৎ হেসে উত্তরও দিচ্ছেন।     


অবশেষে সামনে এল তাঁর আসল পরিচয়। তিনি আর কেউ নন, চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী। সাইকেলে চড়ে জানতে এসেছেন মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা। দেখছেন এলাকার কাজও। বিডিও-র এই ভূমিকায় অবাক সাধারণ মানুষ।


অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। বেশ বিস্ময়ের সঙ্গেই সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, বিডিও আবার গাড়ি ছেড়ে সাইকেলে চড়তে যাবেন কেন? এবিষয়ে বিডিওর সাফ কথা, "গ্রামবাসীর মনের কথা, তাঁদের সমস্যার জানতে হলে গাড়ি হাঁকিয়ে নয়, ওঁদের কাছের মানুষ হতে হবে।" তাই সাইকেল চড়েই তিনি পৌঁছতে চান মানুষের মনের মণিকোঠায়। তাঁর কথায়, "এইভাবে সাধারণ মানুষের সমস্যা যেমন জানা যাবে, তাঁদেরই খোঁজ যেমন নেওয়া যাবে তেমনই  শরীর থাকবে ভালো।" 



বিডিও-র এই ভূমিকায় কী বলছেন গ্রামবাসীরা? গ্রামবাসীদের বক্তব্য, “প্রথমে চিনতে পারিনি। কী করেই বা চিনব। বিডিও আবার সাইকেলে আসে না কি? ওঁরা তো গাড়ি করে আসেন। কিন্তু এই বিডিও সাহেব আমাদের সমস্যার কথা জানতে একেবারে সাইকেলে চড়ে আমাদের কাছে আসছেন। কথাও বলছেন।“ চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারীর এহেন অচেনা-অজানা সাজে গ্রামে সাইকেল চড়ে ঘুরে বেড়ানো ও তাদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা জেনে নেওয়ার চেষ্টায় আপ্লুত গ্রামবাসীরা। তবে এর পর থেকে বিডিও তাদের গ্রামে এলে তারা খাতির-যত্ন করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না।