অলোক সাঁতরা, পশ্চিম মেদিনীপুর : রাজ্য থেকে দেশ, সব জায়গাতেই তৃণমূল ও বিজেপি যুযুধান দু'পক্ষের রাজনৈতিক লড়াই চলছে, সেখানে কার্যত উলটপুরাণ মেদিনীপুর সদর ব্লক এলাকার ধেড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে। এখানে বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যের সমর্থনেই গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। যা নিয়ে অবশ্য দু'দলের বাগযুদ্ধ থেমে থাকেনি। বরং চড়েছে তরজা।
মেদিনীপুর সদর ব্লকের ধেড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা ৮। তিন বছর আগে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ও বিজেপি সম-সংখ্যক আসন পায়। দু'দলই ৪টি করে আসন পাওয়ায় টসের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচিত হন বিজেপির পূর্ণিমা সিংহ। আড়াই মাস আগে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এরপর গতকাল নতুন বোর্ড গঠন করা হয়। সেখানে শাসক দল তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাঁড়ানো সোমবারি কিস্কুকে সমর্থন করেন প্রাক্তন বিজেপি প্রধান পূর্ণিমা সিংহ। সেই হিসেব অনুযায়ী ধেড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫। এর ফলে বিজেপির হাত থেকে দায়িত্ব ছিনিয়ে নিয়ে পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করল তৃণমূল। নিজেদের দখলে গ্রাম পঞ্চায়েত আসার পরই আবির খেলায় মেতে ওঠেন তৃণমূল কর্মীরা। এই প্রসঙ্গে ধেড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন প্রধান সোমবারি কিস্কু বলেন, 'নতুন দায়িত্ব পেয়ে ভালো লাগছে। এলাকাবাসীদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। এবার দল যেমনভাবে নির্দেশ দেবে, সেভাবেই কাজ করব'। পাশাপাশি বিজেপির প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান পূর্ণিমা সিংহ জানান, কারও কথায় নয়, নিজের ইচ্ছেতেই তিনি এই পদ ছেড়ে দিয়েছেন এবং তৃণমূলকে সমর্থন করেছেন। তাঁর বক্তব্য, এবার সবাই মিলেমিশে এলাকার উন্নয়নের কাজ করতে চান।
যদিও এলাকার তৃণমূল নেতারা জানাচ্ছেন যে, বিজেপির হাতে ক্ষমতা থাকায় এতদিন এলাকায় কোনও উন্নয়নই হয়নি। বরং গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসটাও কার্যত পার্টি অফিসে বদলে গিয়েছিল। তাঁদের আশা, শাসকদলের হাতে ক্ষমতা আসায় এবার কাজও হবে, উন্নয়নও হবে। যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি সৌমেন তিওয়ারি কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শাসকদলকে। তিনি বলেন, 'নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই তৃণমূল কার্যত ভয় দেখিয়ে বিজেপির দখলে থাকা পঞ্চায়েতগুলোকে নিজেদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সারা রাজ্যকে বিরোধীশূন্য করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। আর এটা গণতন্ত্রের জন্য খুবই ভয়ঙ্কর।'