সমীরণ পাল, দেগঙ্গা : এখনও বহু কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়ে রয়েছেন বহু মানুষ। তাই এখনও বহু জায়গাতেই অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসকের পরিবর্তে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। আর তার ফলও হচ্ছে মর্মান্তিক। গত ৪৮ ঘন্টায় কুসংস্কারের বলি দেগঙ্গাতে দুই যুবক।  সাপের কামড়ে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে ওঝার বাড়িতে নিয়ে ঝাড়ফুঁক করার ফলে দুই যুবকের মৃত্যু হয়। আর এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসল দেগঙ্গা ব্লক প্রশাসন। দেগঙ্গা থানা ও ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মানুষকে সাপে কামড়ালে কি করনীয়, সেই বিষয়ে মাইকে করে প্রচার  শুরু হয়েছে।  প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ভিআরপি, ভিসিডি কর্মীদেরকে দিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। জানানো হচ্ছে যে, সাপে কামড়ানোর পর ওঝার বাড়িতে না নিয়ে গিয়ে রোগীকে সরাসরি হাসপাতালে যেতে হবে। গুরুত্ব নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আর এভাবেই যদি প্রতি মুহূর্তে মানুষের মধ্যে সচেতনতা প্রচার করা যায়, তাহলে কুসংস্কারের হাত থেকে মানুষ মুক্তি পাবে বলে মনে করছে দেগঙ্গা ব্লক প্রশাসন।



প্রসঙ্গত, কুসংস্কারের জেরেই এক তরতাজা যুবকের প্রাণ গিয়েছিল দেগঙ্গায় বেড়াচাঁপা পাড়ুঁই পাড়া এলাকায়।  মৃত যুবকের নাম সমীর পাড়ুঁই (৪০)। মৃত যুবকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই যুবকের পেশা ছিল মাছ ধরা । রাতের অন্ধকারে খালে বিলে মাছ ধরতে যেতে হত তাঁকে।  দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা দেউলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনে বিলে শুক্রবার রাতে মাছ ধরতে যান ওই যুবক।  তখনই তাঁকে বিষধর সাপে কামড়ায়। এরপর সমীর বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে আসার পর যুবককে কী কামড়েছে তা শনাক্ত করতে ওঝার বাড়িতে যান তাঁর পরিবারের লোকেরা। ওঝার বাড়িতে যাওয়ার পরে ওঝা ঝাড়ফুঁক করে, গাছ গাছড়ার ওষুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।  ওঝার কাছ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসার পর গভীর রাতে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই যুবককে দেগঙ্গা বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।