বর্ধমান: অন্ডালে ট্রাঙ্কবন্দি দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়!পুলিশ সূত্রে দাবি, স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণেই এই খুন!শ্বাসরোধ করতে ব্যবহার করা হয়েছিল সায়ার দড়ি!


প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর লালমতি দেবী নামে এক মহিলার সঙ্গে ২০০৯ সালে বিয়ে হয় দেবানন্দ বাউড়ির। দম্পতি থাকতেন খাঁদরায়। রবিবার ঘর থেকে দেবানন্দর ট্রাঙ্কবন্দি পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনায়, স্ত্রী লালমতি ও তাঁর প্রথমপক্ষের দেওর অমরজিত ভুঁইয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

লালমতি দেবী অবশ্য দাবি করেছেন, ম্যায়নে কুছ নেহি কিয়া।

ধৃত স্ত্রী এই দাবি করলেও, পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় উঠে এসেছে, বছর দুয়েক ধরে অমরজিতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল লালমতির।কিন্তু সন্দেহ এড়াতে অমরজিত কখনওই অন্ডাল আসতেন না।মাঝেমধ্যে লালমতি প্রথমপক্ষের শ্বশুরবাড়ি, ঝাড়খণ্ডের নিরসায় যেতেন।

সেখানেই অমরজিতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হত।

পুলিশ সূত্রে দাবি, কিছুদিন ধরে লালমতির সঙ্গে, তাঁর বর্তমান স্বামীর বনিবনা হচ্ছিল না।

এই পরিস্থিতিতে, ৬ ফেব্রুয়ারিও ঝাড়খণ্ডে যান লালমতি। দেখা করেন দেওরের সঙ্গে। তৈরি হয় খুনের পরিকল্পনা!

সেই মতো ১০ তারিখ ঝাড়খণ্ড থেকে অন্ডালে আসেন অমরজিত।

দেবানন্দর বাড়িতে বসে মদের আসর। মদ্যপানের মাঝে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে যান দেবানন্দ। ফিরে এসে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর প্রথমপক্ষের দেওরকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন তিনি।

ক্ষমা চেয়ে, তখনকার মতো পরিস্থিতি সামাল দেন লালমতি ও অমরজিত।

পুলিশ সূত্রে দাবি, এরপর দেবানন্দকে প্রচুর পরিমাণে মদ খাওয়ানো হয়। বেঁহুশ হয়ে পড়লে, গলায় সায়ার দড়ি পেঁচিয়ে দেবানন্দকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন লালমতি ও অমরজিত।

দেহ ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ট্রাঙ্কে!

ভোরবেলা পালিয়ে যান দেওর!

পুলিশ সূত্রে দাবি,অভিযুক্তদের পরিকল্পনা ছিল, রাতে সুযোগ বুঝে ট্রাঙ্কবন্দি দেহ কোথাও ফেলে দেওয়ার। ঠিক হয়, এ জন্যই রাতে ফের আসবেন অমরজিৎ।

কিন্তু তার আগেই পর্দা ফাঁস হয়ে যায়! দেবানন্দ নিখোঁজ জানতে পেরে, বাড়িতে হাজির হন প্রতিবেশীরা! আর তখনই খোলসা হয় ট্রাঙ্ক-রহস্য!

অন্ডালের এই ঘটনায় অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক রমজান আলির খুনের ঘটনা!

দিনটা ছিল ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর।

সেদিন কিড স্ট্রিটে বিধায়ক-আবাসের মধ্যেই, গলায় সায়ার দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বিধায়ককে! ঘটনায় রমজানের স্ত্রী ও তাঁর এক পুরুষসঙ্গীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সামনে আসে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের তত্ত্ব!