অর্ণব মুখোপাধ্যায়, ঝাড়গ্রাম: শীতের আমেজের মাঝেই ঝাড়গ্রামের হোটেলগুলির বসন্তের বুকিং প্রায় শেষ। মার্চের শেষের দিকে দোল কিন্তু এখন থেকেই বেশিরভাগ হোটেলের রুম বুকড হয়ে গিয়েছে। গত মার্চেও পর্যটকদের চাপ ছিল এই হোটেলগুলিতে। কিন্তু লকডাউন ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকদের বাড়ি ফেরাতে বাধ্য হন হোটেল মালিকরা। তারপর লকডাউন আর করোনা পরিস্থিতিতে বেহাল অবস্থা হয় হোটেলগুলির। ক্ষতির মুখে পড়ে  পর্যটন ব্যবসা।

এর আগে মাওবাদী সঙ্কটের সময় ক্ষতির মুখে পড়েছিল ঝাড়গ্রামের পর্যটন ব্যবস্থা। বিপদের ভয়ে মুখ ঘুরিয়ে নেন পর্যটকেরা। তারপরে কিছুটা আশার আলো দেখা গেলেও করোনা ফের পথে বসিয়েছিল হোটেল মালিকদের। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভ্রমণপিপাসুর দল বেরিয়ে পড়েছেন ঘুরতে। কোভিড বিধি মেনেই হোটেল  আর হোম স্টের মালিকরা পর্যটকদের থাকার বন্দোবস্ত করছেন। ঝাড়গ্রামে হোটেল এবং হোমস্টে মিলিয়ে সংখ্যাটা ৪৫-এর মত। কোভিড পরিস্থিতি কাটিয়ে ভিড় বাড়ছে হোটেলগুলোতে। তবে পর্যটকদের সব থেকে বেশি ভিড় জমে দোলের সময়। তাই এখন থেকেই হোটেল, হোম স্টের যাবতীয় রুম প্রায় বুকড।



ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া আর পুরুলিয়া- জঙ্গলমহলের এই সমস্ত জায়গায় পলাশ দেখতে দোলের সময় ভিড় জমান পর্যটকেরা। ঝাড়গ্রামের রবীন্দ্র পার্কে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়। তবে এ বছর হোটেল মালিকরা পর্যটক টানতে এখানে আরও একটি বসন্ত উৎসবের আয়োজন করতে চান। কনকদুর্গার মন্দির, ডুলুং নদী, তারাফেনী, লালজল, ঘাগড়া, ঢাঙ্গিকুসুম- ঝাড়গ্রামের এই সব জায়গায় আকর্ষণ পর্যটকদের মধ্যে চিরন্তন। তার সঙ্গে উপরি পাওনা এই বসন্ত উৎসব। আর এই সব মিলিয়ে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে ঝাড়গ্রাম। হোটেল মালিক অ্যাসোসিয়েশনের জয়েন্ট সেক্রেটারি এবং অরণ্যসুন্দরী গেস্ট হাউসের মালিক শিবাশিস  চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ঝাড়গ্রামের অধিকাংশ হোটেলের রুমই ভর্তি হয়ে গিয়েছে, অল্প কিছু বাকি রয়েছে। ডবল বেড রুমের ভাড়া পড়ছে দেড় হাজার থেকে দু’হাজার টাকার মধ্যে। গাড়ির খরচ আর লোকাল সাইট সিইং দেড় থেকে দু হাজার টাকা, বেলপাহাড়ি, কাঁকরাঝোড় প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। ঝাড়গ্রাম শহরের কাছাকাছি রয়েছে বেশ কিছু হোটেল, কলাবনি জঙ্গলেও নতুন করে তৈরি হয়েছে কিছু কটেজ। সব মিলিয়ে বসন্ত উৎসবে পর্যটকদের অপেক্ষায় এখন থেকেই অরণ্য সুন্দরী ঝাড়গ্রাম।