দার্জিলিং: আপনারা শান্তি দিন, আমি আপনাদের উন্নয়ন দেব। বাণিজ্য সম্মেলন থেকে পাহাড়বাসীদের বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে দার্জিলিংকে টুকরো করতে উস্কানি দেবেন না জানিয়ে কেন্দ্রকে কটাক্ষও করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিমল গুরুঙ্গের নেতৃত্বে লাগাতার হিংসাত্মক আন্দোলন! হাজার হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি! অবশেষে শান্তি ফেরার পর শুধুমাত্র পাহাড়ের জন্য প্রথমবার রাজ্য সরকারের শিল্প সম্মেলন। আর সেই মঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, আপনারা আমাকে শান্তি দিন। আমি আপনাদের প্রগতি দেব, সমৃদ্ধি দেব। বিরোধীরা অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার মধ্যে বাস্তবতা কম, গিমিক বেশি দেখছেন! বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, উনি এর আগেও শিল্প সম্মেলন করলেন। ১২ লক্ষ টাকাও ইনভেস্ট হয়নি। উদ্দেশ্যে হচ্ছে, পাহাড়ে গিয়ে ঝাণ্ডা গাড়া। নিজের লোকজনকে নিয়ে মোচ্ছব করা। এটা রাজনৈতিক সার্কাস।
জিটিএ-র সহযোগিতায় মঙ্গলবার থেকে দার্জিলিং ম্যালে শুরু হয়েছে দু’দিনের ‘হিল বিজনেস সামিট’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই উন্নয়ন নিয়ে নিজের লক্ষ্যের কথা স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, সরকার ১০০ কোটি টাকা দেব। চা শিল্প, পরিবহণ, আইটি, শিক্ষা, মেডিসিন প্ল্যান্ট, হর্টিকালচার, স্বাস্থ্য-সহ নানা ক্ষেত্রে প্রচুর সুযোগ রয়েছে। কর্মসংস্থানেক জন্য বিনিয়োগ আনতেই হবে। শিল্প গড়তেই হবে। শিল্প মানেই বড় কারখানা নয়।
পাল্টা বিরোধীদের প্রশ্ন, শিল্প নিয়ে নতুন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আগে পুরনো প্রতিশ্রুতির বাস্তব ছবিটা কী সেটা বলুন মুখ্যমন্ত্রী। সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, রাজ্য থেকে শিল্প তাড়িয়ে পাহাড়ে গেছে শিল্প করতে।
পাহাড়বাসীকে কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, হিংসা হলে পলিটিক্যাল পিপলদের লাভ হবে, কিন্তু সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয়। নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে। তাদের জন্য কর্মসংস্থান দরকার। হিংসা নয়। দাবি জানাও গণতান্ত্রিক পথে। শান্তি আনুন, প্রগতি আনুন, দেশকে দেখান দার্জিলিং কিভাবে এগোতে পারে।
বিরোধীদের দাবি, সবটাই ভাঁওতা! কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, পাহাড়ে শিল্প হয় নাকি! কেউ শোনেনি। ওখানে খানাপিনা হবে। শিল্প হবে না।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য মনে করেন, স্থায়ীভাবে শান্তির পরিবেশ বজায় থাকলে পাহাড়ে সব ধরনের উন্নয়ন সম্ভব। সুস্থিতি থাকলেই আসবে বিনিয়োগ। সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিন ফের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।