কলকাতা: ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করায়, সূদুর রায়গঞ্জ থেকে কলকাতায় এসে, তরুণীকে খুনের চেষ্টা!
বাড়িতে এসে, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি!
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ, বেলেঘাটার কালীতারা বোস লেনের বাসিন্দা তরুণীর বাড়ির কলিং বেল বাজান ওই যুবক। তরুণী দরজা খুলতেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালান তিনি!
তরুণী লুটিয়ে পড়লে, হামলাকারী যুবক পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁকে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। মারধর করে তুলে দেন পুলিশের হাতে। ধৃতের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হয় আগ্নেয়াস্ত্র। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দিবাকর দে রায়গঞ্জের বাসিন্দা।
কিন্তু কেন এই হামলা? এই প্রসঙ্গে সামনে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য! গত সেপ্টেম্বরে বেলেঘাটা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এই তরুণী। অভিযোগপত্রে তিনি দাবি করেন, ২০১০ সালে কাঁচরাপাড়ায় তাঁর বিয়ে হয়েছিল। ৫ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ব্যারাকপুর আদালতে তাঁর ‘মিউচুয়াল ডিভোর্সে’র মামলা চলছে।
তরুণীর আরও দাবি, ২০১৫ সালের নভেম্বরে, ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে রায়গঞ্জের বাসিন্দা দিবাকর দে-র সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। দিবাকর নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে আলাপ জমান। প্রতিশ্রুতি দেন, ডিভোর্সের প্রক্রিয়া শেষ হলে, বিয়ে করবেন।
অভিযোগ, এর কিছুদিন পর, বাড়ি দেখানোর নাম করে তরুণী ও তাঁর মেয়েকে রায়গঞ্জেও নিয়ে যান দিবাকর। তরুণীর দাবি, সেখানে আটকে রেখে তাঁকে লাগাতার ধর্ষণ করেন ওই যুবক। ঘুমের ওষুধ খাইয়েও ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ! তখনই তরুণী জানতে পারেন, দিবাকর আদতে চিকিৎসকই নন!
সেপ্টেম্বরে রায়গঞ্জ থেকে পালিয়ে বেলেঘাটায় বাপের বাড়িতে ফেরেন তরুণী। বেলেঘাটা থানায় তাঁর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে দিবাকরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়। আদালতে গোপন জবানবন্দিও দেন তরুণী।
পুলিশ সূত্রে খবর, দিবাকরও কয়েকবার আগাম জামিনের আর্জি জানান। কিন্তু সম্প্রতি খারিজ হয়ে যায় তাঁর আবেদন। তদন্তকারীদের অনুমান, তরুণীর সেই অভিযোগের বদলা নিতেই এদিন তাঁকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করেন দিবাকর। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দিবাকরও বিবাহিত। তাঁর ৬ বছরের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।
তরুণীর পরিবারের প্রশ্ন, সেপ্টেম্বরে দিবাকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পর এতদিনেও কেন তাঁকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ? তাহলেই আর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ পেতেন না দিবাকর। গুলিবিদ্ধ হতে হত না তরুণীকে।