কলকাতা: তুই কোথায় চলে গেলি? ঘরে ফিরে আয়। ছেলেকে হারিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন মা। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। কিন্তু তিলোত্তমার বুকে আগুন কেড়ে নিল একের পর এক প্রাণ। সেই তালিকায় আছেন ঢাকুরিয়ার পঞ্চাননতলার বাসিন্দা বিমান পুরকায়েত। দমকল কর্মী গতকাল সন্ধে নাগাদ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ে গিয়েছিলেন তিনি। উদ্দেশ্য ছিল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা। সেই আগুনই কেড়ে নিল প্রাণ।
পঞ্চাননতলার বাড়িতে কান্নার রোল। ফিরে আয় বাবা। আমার বাচ্চাকে ফিরিয়ে দাও। বারাবার বলে চলেছেন মা। ছেলেকে হারানোর বেদনা চোখের জলেও মুছছে না। ২৭ বছরের এই দমকল কর্মীর বাড়িতে রয়েছেন অসুস্থ মা-বাবা। অক্সিলিয়ারি ফায়ার অপারেটর পদে কর্মরত ছিলেন বিমান। এদিন বিমানের মা জানান, রোজ ফোন করি। কাল ফোনে ব্যালেন্স ছিল না। তাই সারাদিন ফোন করতে পারিনি। ওঁর বাবাও ফোন করতে পারিনি। রাতে সব জানতে পারি।
বিমানের দাদা সুমন পুরকায়েত বলেন, দুপুরের পর একবার কথা হয়েছিল। তখন বলল খেয়েছি। এটাও জানায় যে পূর্ব রেলের অফিসে আগুন লেগেছে যেতে হতে পারে। ৬টা ২০ মিনিটের পর ওর সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারিনি। বারবার ফোন করি। ওর এক বন্ধু ফোনে জানায় ভাইয়ের খারাপ অবস্থা। এরপর স্টেশন অফিসার স্বর্ণেন্দু লাহিড়ী জানান ভাইয়ের মৃত্যুর খবর।
গতকাল সন্ধে ৬টা ১০-এ স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের অফিসের ১৩ তলায় আগুন লাগে। আগুন লাগার পরও কীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল বিল্ডিংয়ে? এই ঘটনায় গাফিলতি কার? সেই প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই। গতকালই স্পেশাল পারমিশন করিয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্ত হয়েছে। জানা গিয়েছে, দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। শরীরে কার্বন মনোক্সাইড পাওয়া গিয়েছে। আগুনে ঝলসে গিয়েছেন ৭ জন। ১ জনকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সূত্রের খবর, তাঁর ডিএনএ টেস্ট করা হতে পারে।