কলকাতা: বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী থেকেছে শহর। তিলোত্তমার বুকে ভয়াবহ  ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৯ জন। বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছেন নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ের ১৩ তলার বেশ কয়েকজন রেল কর্মী। কেউ সময়ের আগে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, কেউ বা গতকাল অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁদের দাবি, ১৩ তলায় শতাধিক কর্মী বসলেও, অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র ছিল নামমাত্র। কোনও কোনও যন্ত্র আবার কাজও করত না। ফায়ার ড্রিলও কখনও হয়নি।


অফিসে না ছিল অটোমেটিক স্প্রিঙ্কলার, না ছিল রিজার্ভার। ওই ১৩ তলায় কর্মরত রেলের এক আধিকারিক জানান, ৫টা নাগাদ অফিস থেকে বেরোই। তখন সব স্বাভাবিক ছিল। ওই ফ্লোরে একসঙ্গে প্রায় ১০০ জন বসি। মাত্র ৩টে সিলিন্ডার আছে। কোনও অটোমেটিক সিলিন্ডার নেই। আরেক রেলকর্মীর কথায়, একবছর আগে সংস্কার করা হয়। কিন্তু ওই ফ্লোরে ফায়ার ফাইটিং-এর কোনও ব্যবস্থা নেই। কম আগুন নেভানোর জন্য ন্যূনতম ব্য়বস্থা আছে।


গতকাল গতকাল সন্ধে ৬টা ১০-এ স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের অফিসের ১৩ তলায় আগুন লাগে। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে ১২ তলায়। সার্ভার রুমে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অফিসে প্রায় ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে আগুন। রেলের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ের ১৩ তলায় বিপজ্জনকভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল তারের কুণ্ডলী। ছিল ফলস্ সিলিং, প্লাইউড দিয়ে তৈরি কিউবিকল। প্রাথমিক তদন্তে দমকলের অনুমান, এই কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন ফরেন্সিক টিম। আগেই গিয়েছেন লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। স্ট্র্যান্ড রোডে গিয়েছেন বিজেপির প্রতিনিধি দল।


এখনও পর্যন্ত ৮ জনকে সনাক্ত করা গিয়েছে। তালিকায় রয়েছেন রেলের ডেপুটি চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার পার্থসারথি মণ্ডল, তাঁর নিরাপত্তারক্ষী আরপিএফ কনস্টেবল সঞ্জয় সাহানি, দমকল আধিকারিক গিরিশ দে ও তিন দমকল কর্মী গৌরব বেজ, অনিরুদ্ধ জানা, বিমান পুরকায়েত, হেয়ার স্ট্রিট থানার এএসআই অমিত ভাওয়াল ও রেলের সিনিয়র টেকনিশিয়ান সুদীপ দাস। ট্যুইটে শোকজ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে নিহতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের পরিবার পিছু ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।