কলকাতা: স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের অফিসে প্রায় ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে আগুন। ভোর ৪:১০ নাগাদ নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। আজ ঘটনাস্থলে যাবে ফরেন্সিক দল। গতকাল ২টি লিফটে আটকে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। এদের মধ্যে রয়েছেন রেলের ডেপুটি চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার পার্থসারথি মণ্ডল, তাঁর নিরাপত্তারক্ষী সঞ্জয় সাহানি, ৪ দমকল কর্মী গিরিশ দে, গৌরব বেজ, অনিরুদ্ধ জানা, বিমান পুরকায়েত, হেয়ার স্ট্রিট থানার এএসআই অমিত ভাওয়াল। এক রেল কর্মী-সহ ২ জনকে এখনও সনাক্ত করা যায়নি।


রেলের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ের ১৩ তলায় বিপজ্জনকভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তারের কুণ্ডলী। রয়েছে ফলস্ সিলিং, প্লাইউড দিয়ে তৈরি কিউবিকল। এই কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে প্রাথমিক তদন্তে দমকলের অনুমান। এমনকি অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত ছিল না বলে অভিযোগ।


উল্লেখ্য, গতকাল সন্ধে ৬টা ১০-এ স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের অফিসের ১৩ তলায় আগুন লাগে। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে ১২ তলায়। সার্ভার রুমে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে যায় দমকলের ২৫টি ইঞ্জিন। রাত ২টো নাগাদ ফের আগুন দেখা যায়। পরে একটি লিফটে বন্ধ অবস্থায় উদ্ধার হয় রেল আধিকারিক-সহ ২ দেহ। অপর লিফটে ৪ দমকল কর্মী-সহ ৭ জনের মৃত্যু হয়। লিফটে আটকে ঝলসে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। 


রেলের সার্ভার রুমে আগুন লাগায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে অনলাইন টিকিট বুকিং পরিষেবা। পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায় অনলাইন রিজার্ভেশন বন্ধ। আপাতত বন্ধ রয়েছে পূর্ব রেল, দক্ষিণ-পূর্ব রেল ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের বুকিং। উল্লেখ্য, গতকাল রাতেই ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী এবং দুই মন্ত্রী সুজিত বসু ও ফিরহাদ হাকিম। রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের কয়লাঘাট বিল্ডিং-এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি সমাবেদনা জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবেন রেল আধিকারিকরা। অগ্নিকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখতে রেলমন্ত্রকের পক্ষ  উচ্চ পর্যায়ের  চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনও করা হয়েছে। ট্যুইট রেলমন্ত্রীর। 
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পূর্ব রেলও। অগ্নিকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে রাজ্য সরকার ও দমকল কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয়ে রেখে সব রকম সাহায্য করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে।