কলকাতা: গলা বুজে আসছে। কথা বলতে পারছেন না। চোখে মুখে চিন্তার ছাপ। গতকাল দুপুরে যিনি বাড়ি থেকে বেরোলেন তাঁর খোঁজ নেই। শুধু অসহায়ের মতো বলে চলেছেন আমি কিছুই জানি না। তিনি অমিত ভাওয়ালের স্ত্রী। হেয়ার স্ট্রিট থানার এএসআই অমিত ভাওয়াল।  প্রতিদিনের মতো বেড়িয়েছিলেন বাড়ি থেকে হেয়ার স্ট্রিট থানার এএসআই। শহরের বুকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তছনছ করে দিল বাগুইআটির পরিবারকে। পূর্ব রেলের বিল্ডিংয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অমিত ভাওয়ালের। সকাল পর্যন্ত মৃত্যুর খবর জানা ছিল না তাঁর স্ত্রীয়ের।


বাগুইআটির দেশবন্ধুনগরের বাসিন্দা পুলিশ অফিসার অমিত ভাওয়াল। তাঁর স্ত্রী সকাল পর্যন্ত জানতেন না স্বামীর মৃত্যুর খবর। তিনি বলেন, ওঁকে বারবার ফোন করি। ওঁকে ফোনে না পেয়ে ওঁর এক বন্ধুর সঙ্গে জানাই। একজন ফোন করে জানায়, শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল তাই পিজি-তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাকেও পিজিতে যেতে বলা হয়।


গতকাল সন্ধে নাগাদ রেলের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ে আগুন লাগে। একটি লিফটে বন্ধ অবস্থায় উদ্ধার হয় রেল আধিকারিক-সহ ২ দেহ। অপর লিফটে ৪ দমকল কর্মী-সহ ৭ জনের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে রয়েছেন রেলের ডেপুটি চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার পার্থসারথি মণ্ডল, তাঁর নিরাপত্তারক্ষী সঞ্জয় সাহানি, ৪ দমকল কর্মী গিরিশ দে, গৌরব বেজ, অনিরুদ্ধ জানা, বিমান পুরকায়েত, হেয়ার স্ট্রিট থানার এএসআই অমিত ভাওয়াল রেলের সিনিয়র টেকনিশিয়ান সুদীপ দাস।


ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কার্যত বিশ্বাসই করতে পারছেন না শহরবাসী। কীভাবে হল এই ঘটনা? কে দায়ী? কার গাফিলতি? একইসঙ্গে তরতাজা ৯ প্রাণের মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না কেউই। অগ্নি নির্বাপণ ব্য়বস্থায় ঘাটতি ছিল বলে সূত্রের খবর।  পূর্ব রেলের অফিসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। ৩০৪-এর A অর্থাৎ গাফিলতির কারণে মৃত্যু ও দমকল আইনে মামলা রুজু হয়েছে।