ওয়াশিংটন : বাতাসে দূষণের মাত্রার সঙ্গে ওঠানামা করে 'মানসিক ভারসাম্য'। দূষণ অত্যধিক মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে 'ডিমনেশিয়া' (স্মৃতিভ্রংশ) রোগের শিকার হতে পারে মানুষ। আমেরিকার সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য। 


মার্কিন মুলুকের গবেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন বায়ু দূষণ ও 'ডিমনেশিয়া' নিয়ে পর্যবেক্ষণের ফলে এই সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছেন তাঁরা। পিউজেট অঞ্চলে শুরু হয় এই গবেষণা। ১৯৭০ সালে প্রথমে বায়ুদূষণ নিয়ে গবেষণার সূত্রপাত। পরবর্তীকালে ১৯৯৪ সালে এর সঙ্গে যুক্ত হয় নতুন এক প্রোজেক্ট। যেখানে 'ডিমনেশিয়া'র ঝুঁকির বিষয়গুলি নিয়ে শুরু হয় চর্চা। এই দুই গবেষণার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পান ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের গবেষকরা।  


তাঁরা দেখতে পান, সিয়াটেল অঞ্চলে গত এক দশকে বাতাসে ধূলিকণার মাত্রা ২.৫ মাইক্রোমিটার বেড়েছে। যা ওই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ডিমনেশিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইউনিভার্সিটির গবেষক রাচেল শাফার বলেন, ''কিউবিক মিটারে এক মাইক্রোগ্রাম ধূলিকণা বেড়ে যাওয়ার ফলে ১৬ শতাংশ ডিমনেশিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় মানুষের। অ্যালজেইমার্স টাইপ ডিমনেশিয়ার ক্ষেত্রেও একই বিষয় দেখা যায়।''


গত ৪ অগাস্ট 'এনভায়রনমেন্টাল হেলথ পার্সপেকটিভস' জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা। ৪০০০ সিয়াটেলের বাসিন্দাদের ওপর গবেষণা  চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে আসেন গবেষকরা। যেখানে ACT বা 'অ্যাডাল্ট চেঞ্জেস ইন থট' প্রসেস নিয়ে পর্যবেক্ষণ চলে। ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের সঙ্গে গবেষণায় অংশ নেয় Kaiser Permanente Washington Health Research 
Institute। ১৯৯৪ সাল থেকে গবেষণার পর দেখা যায়, এলাকার ১০০০ জন বাতাসে দূষণ বৃদ্ধির জন্য ডিমনেশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।


একবার ডিমনেশিয়ার রোগীকে শনাক্ত করা গেলে বাতাসে গড় দূষণের পরিমাণ বোঝার চেষ্টা করেন গবেষকরা। তাতেই বেরিয়ে আসে যাবতীয় তথ্য। এ প্রসঙ্গে রাচেল বলেন, ''আমরা জানি এই নির্দিষ্ট অঞ্চলে কোনও ব্যক্তির ডিমনেশিয়া হতে অনেক সময় লেগেছে। কখনও এক বছর তো কখনও এক দশক সময় লেগেছে এই রোগ হতে। ৪০ বছরের ওই নির্দিষ্ট এলাকার বায়ু দূষণের তথ্য ঘেঁটে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি আমরা। এত দীর্ঘ সময়ের ডেটা সুরক্ষিত রাখাই যে কোনও গবেষণার ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।''