নয়াদিল্লি: ১০০ বছর আগে তলিয়ে গিয়েছিল। মহাসাগরের নীচে পড়ে রয়েছে ধ্বংসাবশেষ। তার পরেও টাইটানিক নিয়ে আজও মেটেনি কৌতূহল। গাঁট থেকে মোটা টাকা খরচ করে সেই ধ্বংসাবশেষ চাক্ষুষ করতেও ছুটে যান মানুষ জন। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষকে ঘিরে গড়ে উঠেছে পৃথক পর্যটন শিল্পও। কিন্তু সেই টাইটানিক দর্শন ঘিরেই এবার বিপত্তি বাধল। পর্যটকদের নিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ হয়ে গেল আস্ত একটি ডুবোজাহাজ। আমেরিকা এবং কানাডা, দুই দেশ হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে সেটিকে।


ওশিয়ান গেট এক্সপেডিশন নামের একটি সংস্থার তরফে এই মহাসাগরের নীচে পর্যটন চালানো হয়। রবিবার পর্যটকদের নিয়ে আটলান্টিকে নেমেছিল তাদের একটি ডুবোজাহাজ। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছাকাছি পৌঁছতে আট ঘণ্টা সময় লাগার কথা ছিল। কিন্তু মহাসাগরের জল ছোঁয়ার ৪৫ মিনিট পর থেকেই খোঁজ মিলছে না ডুবোজাহাজটির। 


রবিবার রাত থেকে দফায় দফায় তল্লাশি চলছে আটলান্টিক মহাসাগরে। আমেরিকা এবং কানাডা, দুই দেশের তরফেই পৃথক অভিযান চালানো হচ্ছে।  রাতের অন্ধকারেও চলছে অভিযান। নৌবাহিনীর সাহায্য নেওয়া হচ্ছে উদ্ধারকার্য চালাতে। বেসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিও হাত লগিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত হদিশ মেলেনি ওই ডুবোজাহাজটির। 


সোমবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ডুবোজাহাজটিতে আর চারদিন চালানোর মতো অক্সিজেন বেঁচে রয়েছে। তাই মহাসাগরের যতদূর সম্ভব চষে ফেলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমেরিকার তরফে নামানো হয়েছে বায়ুসেনার বিমান, নৌবাহিনীর ডুবোজাহজও।  'পোলার প্রিন্স' নামের একটি গবেষণাকারী জাহাজও নেমেছে জলে। তারা মহাসাগরের নীচের ভূমিতে তল্লাশি চালায়। 


আন্তর্জতিক সংবদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, নিখোঁজ ওই ডুবোজাহাজে সওয়ার ছিলেন ব্রিটেনের ধনকুবের হ্যামিশ হার্ডিং। যুদ্ধবিমান নির্মাণকারী সংস্থা 'অ্যাকশন এভিয়েশনে'র চেয়ারম্যান তিনি। গভীর সমুদ্রে যাওয়ার নেশা ছিল তাঁর। সপ্তহান্তে সেই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপটেডও দিয়েছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, টাইটানিক দর্শনের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন তিনি। এবছর প্রথম তিনিই টাইটানিক দর্শনে যাচ্ছেন বলেও জানান। ডুবোজাহাজের সঙ্গে নিখোঁজ তিনিও।


আটলান্টিক মহাসাগরর ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে পড়ে রয়েছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ। রবিবার যে ডুবোজাহাজটি তার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল, সেটির নাম 'টাইটান সাবমার্সিবল'। সেটির দৈর্ঘ্য ২২ ফুট। ওজন ১০ হাজার ৪৩২ কেজি।  একটানা ৯৬ ঘণ্টা পাঁচ সওয়ারিকে নিয়ে রওনা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। তাতে চেপে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দর্শন, এবং গভীর সমুদ্রে বিচরণ  করতে খরচ পড়ে মোটা টাকা, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি।