সুকান্ত দাস, মইপীঠ: আতঙ্ক দানা বাধছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। এ বার আশঙ্কা সত্যই হল। মইপীঠে বাঘের হানায় (Tiger Attack)  প্রাণ গেল এক মৎস্যজীবীর (Fisherman Dead)। জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েই তিনি বাঘের মুখে পড়েন বলে জানা গিয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু বাঁচানো যায়নি।


মইপীঠ কোস্টাল থানার নগেনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা পঞ্চু মুন্ডা। বয়স ৫০ বছর। স্ত্রী এবং দুই সহযোগীকে নিয়ে শনিবার সকালে সুন্দরবনের (Sundarbans News) জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে বেরোন তিনি। সেই সময় আচমকাই একটি বাঘ তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে দাবি পঞ্চুর পরিবারের।


পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়ে পঞ্চুর ঘাড়ে থাবা বসায় বাঘটি। তার পর টানতে টানতে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায় তাঁকে। কোনও রকমে চিৎকার করে সাহায্যের আর্তি জানান পঞ্চু। তাতেই থতমত খেয়ে পঞ্চুকে ছেড়ে দেয় বাঘটি। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে জয়নগর কুলতলী গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।


এর আগে, গত বুধবার মাছ-কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার সময় দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) কুলতলির পেটকুলচাঁদ সেতুর কাছে গ্রাম সংলগ্ন নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান এলাকার মহিলারা। তাতে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে সেখানে যান বন দফতরের কর্মী এবং আধিকারিকরা। গোটা এলাকা জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। পাতা হয় খাঁচা। রাতে ধরা পড়ে বাঘটি। তার পর এক দিন চিকিৎসাধীন রেখে শুক্রবার দুপুরে সুন্দরবনের ছামটা জঙ্গলে বাঘটিকে নিয়ে যান বন দফতরের কর্মী এবং আধিকারিকরা (Forest Department Officials)। খাঁচা খুলে সেখানেই তাকে মুক্ত করে দেওয়া হয়।


গত কয়েকমাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা, পাথরপ্রতিমা, রায়দিঘি, কুলতলি-সহ একাধিক জায়গায় রয়্যাল বেঙ্গলের দেখা মেলে। এর আগে, কুলতলিরই ডোঙ্গাজোড়া গ্রামে হানা দেয় বাঘ। বাঘের আক্রমণে সেখানে জখমও এক গ্রামবাসী। সে বার বন দফতরের তরফে দুটি খাঁচা পাতা হয়। জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় ডোঙ্গাজোড়া গ্রামে কেল্লার জঙ্গল। দীর্ঘ চেষ্টা চরিত্রের পর সেখানে বাঘটির নাগাল মেলে। বার বার এ ভাবে লোকালয় বাঘ ঢুকে পড়া নিয়ে বন দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়দের একাংশ।