নয়াদিল্লি: রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠছে লাগাতার। সেই আবহেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের ডানা ছাঁটল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, বিশেষ আদালতে মামলা গৃহীত হলে অভিযুক্তকে সরাসরি গ্রেফতার করতে পারবে না ED. এ ব্যাপারে আগে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। (Supreme Court) 


বৃহস্পতিবার একটি মামলার শুনানিতে এই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ২০০২ সালের আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের (PMLA) বিশেষ আদালতে কোনও মামলা গেলে, ১৯ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে আর সরাসরি কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED. বরং কাউকে হেফাজতে নিতে গেলে, এক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি আদায় করতে হবে তাদের। (ED Arrest Power Curtailed)


এদিন বিচারপতি এএস ওকা এবং ঊজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চে শুনানি চলছিল, তাতে আদালত বলে, "বিশেষ আদালতে বিষয়টি গৃহীত হলে ED এবং তাদের আধিকারিকদের আর ১৯ নং ধারায় ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা থাকে না। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারে না তারা। অভিযুক্ত যদি তদন্ত প্রক্রিয়া চলাকলীন  হাজিরা দিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে তাঁকে হেফাজতে পেতে চাইলে বিশেষ আদালতের অনুমতি নিতে হবে ED-কে।"


আরও পড়ুন: Shyam Rangeela: পদে পদে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা দিয়েও বারাণসীতে আশাহত ‘অন্য মোদি’


পাশাপাশি, শীর্ষ আদালত আরও জানিয়েছে, এর পরও যদি ED ওই অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যেতে চায়, অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত হিসেবে নাম না থাকলেও কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারে তারা, তবে সেক্ষেত্রে অভিযোগ দায়ের হতে হবে আগেই, যার উল্লেখ রয়েছে PMLA-র ১৯ নং ধারায়। ৪৪ নং ধারায় অভিযোগ দায়ের করার আগে পর্যন্ত যদি ED অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করে থাকে, সেক্ষেত্রে আদালত অভিযুক্তের নামে সমন জারি করতে পারে, তবে ওয়ারেন্ট নয়। এমনকি যে মামলায় অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত আছেন, সেক্ষেত্রেও সমন জারি আবশ্যক। 


শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ২০৪ নং ধারায় সমন জারি করার পর অভিযুক্ত যদি বিশেষ আদালতের সামনে হাজিরা দেন, সেক্ষেত্রে তিনি হেফাজতে রয়েছেন বলে মনে হয় এমন আচরণ করা যাবে না। তাই সেক্ষেত্রে জামিনের জন্য আবেদন করারও প্রয়োজন নেই তাঁর। বিশেষ আদালত তাঁকে ৮৮ ধারায় বন্ড প্রদানের নির্দেশ দিতে পারে। এমনকি উপযুক্ত কারণ দেখালে বিশেষ আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সশরীরে হাজিরা দেওয়া থেকেও অব্যাহতি দিতে পারে। 


সমন পেয়েও যদি অভিযুক্ত হাজিরা না দেন, সেক্ষেত্রে ৭০ নং ধারায় ওয়ারেন্ট জারি করতে পারে বিশেষ আদালত। প্রথমে জামিনযোগ্য ধারায় ওয়ারেন্ট জারি করতে হবে। কোনও কারণে তা সম্ভব না হলে, তবেই জামিন অযোগ্য ধারায় ওয়ারেন্ট জারি করতে পারবে আদালত। হেফাজতে না থাকা অভিযুক্তের থেকেই বন্ড নেওয়া যাবে। আস সেই বন্ড গৃহীত হওয়ার অর্থই জামিন মঞ্জুর হওয়া নয়। আদালত চাইলে ওয়ারেন্ট বাতিলও করতে পারে। আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ক্ষেত্রেও এ নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। গ্রেফতারির পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁর আইনজীবী। সেই আবহেই একটি মামলার শুনানিতে এমন নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত।