নয়াদিল্লি : মুম্বই মেট্রো রেল কর্পোরেশনকে (Mumbai Metro Rail Corporation) ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এর আগে আদালত অ্যারে কলোনিতে একটি কার শেড বানানোর জন্য ৮৪টি গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছিল। তার পরেও ১৭৭টি গাছ কাটার অনুমতি চাওয়ায় সোমবার মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষকে ওই পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হয়। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে এমনই খবর।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসিমহা ও জেবি পর্দিওয়ালার একটি বেঞ্চ মুম্বই মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করে, ৮৪টি গাছ কাটার পরও আরও গাছ আপনারা কী করে কাটতে চান ? আপনারা আমাদের নির্দেশিকা অবমাননা করছেন। আদালতের আদেশের উপর আপনারা যেতে পারেন না। আমরা নির্দিষ্টভাবে ৮৪টি গাছের ক্ষেত্রে নির্দেশিকা তুলে রেখেছিলাম। আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, মুম্বই মেট্রো রেল কর্পোরেশনের সুপ্রিম কোর্টে আসা উচিত জানা সত্ত্বেও, তাদের তরফে Tree Authority-র দ্বারস্থ হওয়া "অনুচিত" হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা ক্ষমা চেয়ে নেন। তাঁর বক্তব্য, 'আদালতের নির্দেশের উপর যাওয়ার কোনও ইচ্ছা মুম্বই মেট্রোর ছিল না। নতুন সার্ভের কারণে আরও গাছ কাটার প্রয়োজন রয়েছে।' কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, মুম্বই মেট্রো রেল কর্পোরেশনকে ওই জঙ্গলের চিফ কনজার্ভেটরের কাছে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা দিতে হবে। যদিও Tree Authority-র ১৫ মার্চের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দেয়নি শীর্ষ আদালত। সেই অনুযায়ী, ১২৪টি গাছ কেটে ফেলার কথা বলা হয়েছে। এবং পাশাপাশি ৫৩টি গাছ পুঁততে হবে। বিচারপতিদের বক্তব্য, এই ধরনের কাজ জনসাধারণের জন্য নির্ধারিত প্রকল্পকে স্থবির করে রেখে দিতে পারে। যা অভিপ্রেত নয়।
প্রসঙ্গত, মুম্বইয়ের শেষ 'সবুজ-ফুসফুস' অ্যারে জঙ্গলে গাছ কাটার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা, পরিবেশকর্মী ও ছাত্র-ছাত্রীরা। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে সেইসময়ের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-কে এই পদক্ষেপের মধ্যস্থতা করে গাছ কাটা থামানোর অনুমতি জানিয়েছিলেন আইনের একদল ছাত্র। সেই সময় সুপ্রিম কোর্ট মেট্রো রেলের প্রোজেক্টে Status quo আদেশ দিয়েছিলেন। ওই বছরের নভেম্বর মাসে উদ্ধব ঠাকরে সরকার কার শেডের কাজ থামিয়ে দিয়েছিলেন। পরের বছর ১১ অক্টোবর ঠাকরে ঘোষণা করেন, অ্যারে কলোনির ৮০০ একর জমিকে সংরক্ষিত জঙ্গল বলে ঘোষণা করা হবে। এর পাশাপাশি মেট্রো প্রোজেক্টের কার শেডকে কাঞ্জরমার্গে স্থানান্তরিত করা হবে। যদিও একনাথ শিণ্ডে ২০২২ সালের জুলাই মাসে মহারাষ্ট্রের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর উদ্ধব ঠাকরের সিদ্ধান্তকে বাতিল করে দেন।