নয়াদিল্লি: যৌন অপরাধের ক্ষেত্রে ভারতীয় আইনব্যবস্থা একপেশে বলে অভিযোগ আজকের নয়। ইদানীং কালে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা, বিতর্ক জোর পেয়েছে আরও। সেই আবহেই এবার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। কোনও মহিলার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করা সম্ভব কিনা, তা বিচার-বিবেচনা করে দেখবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। (Supreme Court)


ছেলের নাম থাকা একটি মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী জামিনের আর্জি জানান ৬১ বছরের এক মহিলা। পুত্রবধূর দায়ের করা মামলায় ছেলের পাশাপাশি, তাঁরও নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদনের প্রেক্ষিতেই মহিলাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়েরের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে রাজি হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ ব্যাপারে পঞ্জাব সরকারের প্রতিক্রিয়াও চাওয়া হয়েছে। (Woman Charged in Rape Case)


সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ঋষিকেশ রায় এবং সঞ্জয় করোলের ডিভিশন বেঞ্চ বিষয়টি বিচার-বিবেচনা করে দেখবে। আপাতত ওই মহিলাকে গ্রেফতারি থেকে রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে সবরকম ভাবে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে তাঁকে। চার সপ্তাহের মধ্যে পঞ্জাব সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তার পর বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট।


আরও পড়ুন: TMC MP Mahua Moitra:মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে সোমবার লোকসভায় রিপোর্ট জমা দেবে লোকসভার এথিক্স কমিটি


জামিনের আবেদন জানানো ওই মহিলার আইনজীবী ঋষি মালহোত্র জানান, তাঁর মক্কেলের পুত্রবধূ যতগুলি অভিযোগ এনেছেন, তার মধ্যে অধিকাংশই জামিনযোগ্য। কিন্তু ৩৭৬ (২) (n) ধারায় (বার বার ধর্ষণ) যে অভিযোগ এনেছেন, তা জামিন অযোগ্য। দোষী সাব্যস্ত হলে ১০ বছরের কম সাজার কোনও সম্ভাবনাই নেই, যাবজ্জীবনও হতে পারে। মহিলাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়েরের বিধি নেই বলেও আদালতে জানান আইনজীবী ঋষি। তাতেই বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখার কথা জানায় সুপ্রিম কোর্ট


যে মামলার দরুণ এই উদ্য়োগ, সেটিতে ওই মহিলার পুত্রবধূ জানিয়েছেন, ওই মহিলার বড় ছেলে, যিনি আমেরিকায়য় থাকতেন, তাঁর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। মুখোমুখি কখনও দেখা হয়নি। পরে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা। বিয়ের পর শাশুড়ির সঙ্গে থাকতে শুরু করেন তিনি। এর পর, যখন পর্তুগালে ছিলেন, ছোট দেওর দেখা করতে এসেছিলেন। দেওরের সঙ্গে সেই সময় চলে যেতে বলা হয় তাঁকে। তার পর থেকে অশান্তি বাড়তে থাকে ক্রমশ। পরে ১১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিবাহে ইতি টানার সিদ্ধান্ত নেয় দুই পরিবারই। এর পরই থানায় এফআইআর দায়ের করেন ওই মহিলার পুত্রবধূ। ওই মহিলা, তাঁর ছোট দেওরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেন তিনি।