পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ধৃত হরিয়ানার ইউটিউবার জ্যোতির সম্পর্কে রোজই সামনে আসছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। জ্যোতির ফোন এবং ল্যাপটপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে আরও বিস্ফোরক কিছু ,মনে করছেন গোয়েন্দারা। এর মধ্যেই জানা গিয়েছে, পাক দূতাবাসের একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কীভাবে সখ্যতা গড়ে উঠেছিল জ্যোতির। তারপর তাদের হাত ধরে পাকিস্তানের আইএসআই আধিকারিকদের সঙ্গে চূড়ান্ত দহরম-মহরম গড়ে উঠেছিল এই ইউটিউবারের। তার ইউটিউব ভিডিও থেকেই পরিষ্কার । তিনি দেশে - দেশে ঘুরে বেড়াতেন, মুঠো - মুঠো পয়সা ওড়াতেন। প্রশ্ন উঠছে এই পাহাড়প্রমাণ টাকা এব কোত্থেকে? শুরুটা কেমন ছিল এই জ্যোতির? 

ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা বিশেষ করে ভ্রমণ ব্লগ তৈরি করতেন এবং তার ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রাম পেজে লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার ছিলেন। পুলিশ তার চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কেও বহু তথ্য পেয়েছে। ফলে মানুষ জ্যোতি মালহোত্রার সম্পত্তি সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছে গোয়েন্দাদের। জ্যোতির এই ঝাঁচকচকে জীবন, রাজকীয় জীবন যাত্রা দেখে অনেক মানুষও জানতে চাইছেন, কত টাকার মালিক এই 'পাক-গুপ্তচর'? 

২০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি

জ্যোতি মালহোত্রা হিসারের একটি কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। ইউটিউবার হওয়ার আগে তিনি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, জ্যোতি মালহোত্রার সেই সময় বেতন ছিল মাত্র ২০ হাজার টাকা। কয়েক মাস চাকরি করার পর জ্যোতি সেই চাকরি ছেড়ে ইউটিউবার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ভ্রমণ ব্লগ তৈরি শুরু করেন।

ইউটিউব থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আয়

জ্যোতি মালহোত্রার প্রচুর আয় তার ইউটিউব চ্যানেল 'ট্রাভেল উইথ জো' এবং ইনস্টাগ্রাম থেকে হত। জ্যোতির ইউটিউবে ৩.৭৭ লক্ষের বেশি সাবস্ক্রাইবার, অন্যদিকে ইনস্টাগ্রামে ১.৩১ লক্ষের বেশি ফলোয়ার আছে। তিনি তার ভ্রমণ ব্লগ, প্রচারমূলক ভিডিও, বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ভালো আয় করতেন।

ইউটিউবের পেমেন্ট স্ট্রাকচার অনুসারে,  প্রতি ১০০০ ভিউতে ১ থেকে ৩ ডলার (৮০-২৪০ টাকা) পর্যন্ত রোজগার করা যায়।  জ্যোতি  মালহোত্রার ইউটিউব চ্যানেলে, তার প্রতিটি ভিডিওতে গড়ে ৫০ হাজার ভিউ আসত এবং প্রতি মাসে তিনি প্রায় ১০টি ভিডিও আপলোড করতেন। এভাবে প্রতি মাসে শুধুমাত্র ইউটিউব থেকেই জ্যোতি মালহোত্রার আয় ৪০ হাজার থেকে ১,২০,০০০ টাকা পর্যন্ত হওয়ার কথা । এছাড়াও স্পন্সরড ডিল, প্রচারমূলক ভিডিও, বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জ্যোতির আলাদা আয়ও হত। 

জ্যোতির সম্পত্তি কত ?

জানা গিয়েছে, জ্যোতির হিসারে ৫৫ গজ জমির একটি বাড়ি আছে। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তার প্রতি মাসে ১.৫ থেকে ২ লক্ষ টাকা আয় হয় বলে অনুমান করা হচ্ছে। এছাড়াও পুলিশ জ্যোতি মালহোত্রার চারটি অ্যাকাউন্ট পেয়েছে, যার টাকার উৎস সম্পর্কে তদন্ত চলছে। এই চারটি অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে, সেই তথ্য এখনও জনসমক্ষে আসেনি।