সম্প্রতি হাতে লেখা সারদাকর্তার চিঠিতে দাবি করা হয়, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর ৬ কোটি টাকা নিয়েছেন। এছাড়াও বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ২ কোটি এবং সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী ৯ কোটি টাকা নিয়েছেন।এরা প্রত্যেকেই হাস্যকর বলে চিঠিটিকে উড়িয়ে দিয়েছেন।
যদিও বিধানসভা ভোটের মুখে অত্যন্ত পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই চিঠি লিখিয়ে হইচই বাধানো হয়েছে বলে মনে করছেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব।
চিঠিতে সুদীপ্ত সেন দাবি করেছেন মুকুল রায় প্রচুর টাকা নিয়েছেন। টাকার পরিমাণ কত তিনি মনে করতে পারছেন না। মুকুল আগেই দাবি করেছেন, গোটাটাই গটআপ গেম! যদিও, আইনজীবী মারফৎ সুদীপ্ত সেনের চিঠি বলে যে নথি প্রকাশে এসেছে, সেই সংক্রান্ত নথি আদালতে সারদা মামলার কেস রেকর্ডে নথিবদ্ধ করার দাবি তুলেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। বলেছেন, চিঠিটি সুদীপ্ত সেন লিখেছেন কি না যাচাই করে দেখা হোক এবং লিখে থাকলে তা তদন্তের আওতাভুক্ত করা হোক।
সাড়ে ৭ বছর ধরে জেলবন্দি সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। গত ৫ ডিসেম্বর তাঁর চিঠি সামনে আসতেই শুরু হয় হইচই। সূত্রের খবর, সারদা-কর্তার হাতে লেখা সেই চিঠি সংশোধনাগারের বিধি মেনে পাঠানো হয় কারা বিভাগের এডিজি ও আইজিকে। চিঠির সত্যতা স্বীকার করে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, একটি চিঠি লিখেছেন সুদীপ্ত সেন। সেই চিঠি নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
সারদা গ্রুপ অফ কোম্পানির মালিক ও অধিকর্তার পরিচয় দিয়ে চিঠি লেখেন সুদীপ্ত সেন। এবিপি আনন্দ এই চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি। তবে, ওই চিঠিতে দাবি করা হয়, সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস এবং তৃণমূলের অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারাও টাকা নিয়েছেন। টাকা নিয়েছেন অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিও। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সিবিআই ও রাজ্য পুলিশের কাছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানান সুদীপ্ত। এও লেখেন, তিনি এটা দেখে মর্মাহত যে যাঁরা টাকা নিয়েছেন তাঁরা আবার বিজেপিতেও যোগ দিচ্ছেন!
কিন্তু, রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, হঠাৎ বিধানসভা ভোটের মুখে কেন এই চিঠি লিখলেন সুদীপ্ত সেন? নেপথ্যে কি বিশেষ কোনও চাপ? ৬ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই সারদা কাণ্ডের তদন্ত করছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত কেন নিষ্পত্তি করা গেল না? লক্ষ লক্ষ আমানকারীর কষ্টের টাকা যে রাঘববোয়ালরা খেল, তারা কোথায়? গোটা তদন্তটাই কি রাজনীতির খেলা? সত্যিটা কি কোনওদিন আদৌ বেরোবে?