বারাণসী: প্রয়াত যোগগুরু স্বামী শিবানন্দ বাবা। শনিবার রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১২৯ বছর। নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন স্বামী শিবানন্দ। শ্বাসকষ্টের সমস্যাতেও ভুগছিলেন। গত কয়েক দিন ধরে ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। সেই অবস্থায় শনিবার রাতে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে তিনি মারা যান বলে জানা যাচ্ছে। সোমবার তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হতে পারে বলে খবর। (Swami Sivananda Dies)
স্বামী শিবানন্দের শিষ্য সঞ্জয় সর্বজ্ঞ জানিয়েছেন, শনিবার রাত ৯টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন যোগগুরু। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন যোগগুরু, সঙ্গে অন্যান্য সমস্যাও ছিল। গত ৩০ এপ্রিল বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানেই গত তিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন স্বামী শিবানন্দ। শেষ পর্যন্ত শনিবার রাতে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়, তাতেই আর ফেরানো যায়নি তাঁকে। (Swami Sivananda Baba)
দেশের বাইরে বিদেশেও পরিচিতি রয়েছে স্বামী শিবানন্দের। এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, তাঁর পার্থিব শরীর দুর্গাকুণ্ডের আশ্রমে রেখে দেওয়া হবে, যাতে অনুগামীরা শেষ দর্শন পান। সোমবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হতে পারে। বয়স ১২৯ হলেও শেষ জীবনে যথেষ্ট সক্ষম ছিলেন স্বামী শিবানন্দ। প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা যোগব্যায়াম করতেন তিনি, যা তাঁর সুদীর্ঘ জীবনের চাবিকাঠি হয়ে ওঠে বলে জানা যায়। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রবীণ নাগরিক হিসেবে নাম নথিভুক্ত করতে গিনেস বুক এফ রেকর্ডসেও তাঁর জন্য আবেদন যায়।
সরকারি নথি অনুযায়ী, ১৮৯৬ সালের ৮ অগাস্ট জন্ম স্বামী শিবানন্দের। অবিভক্ত ভারতের সিলেটে, দরিদ্র পরিবারে তাঁর জন্ম বলে জানা যায়। সংসার চালাতে ভিক্ষা করতেন তাঁর মা-বাবা। মাত্র ছ’বছর বয়সে, একই মাসে মা-বাবা-বোনকে হারান। এর পর আত্মীয়দের কাছেই বড় হন স্বামী শিবানন্দ। পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপে কাটিয়েছেন বেশ কয়েক বছর। বৃন্দাবনেও কিছুদিন ছিলেন।১৯৭৯ সালে বারাণসী চলে আসেন। গুরু ওমকারনন্দের কাছ থেকে যোগশিক্ষা লাভ করেন। সেখানকার দুর্গাকুণ্ডেই স্বামী শিবানন্দের আশ্রম রয়েছে। গত ১০০ বছর ধরে প্রয়াগরাজ, নাসিক, উজ্জয়ন এবং হরিদ্বারে কুম্ভমেলায় অংশ নেন নিয়মিত। ২০২২ সালে তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে সম্মানিত করেন তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। পাশাপাশি, যোগরত্ন পুরস্তাক, বসুন্ধরা রত্ন পুরস্কারও পেয়েছেন।
সেক্টর ১৬-তে সঙ্গম লোয়ার রোডে স্বামী শিবানন্দের যে আশ্রম, তার বাইরে বিরাট ব্যানার রয়েছে, যাতে তাঁর আধার কার্ডের ছবি রয়েছে। কুষ্ঠরোগীদের সেবাতেও নিজেকে উৎসর্গ করেন স্বামী শিবানন্দ। পুরীর প্রায় ৪০০-৫০০ কুষ্ঠরোগীর সেবা করেন তিনি, যাঁরা ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবনযাপন করতেন। নিয়মিত দরিদ্র এলাকাতেও যাতায়াত ছিল।