দামাস্কাস : জেলে বন্দি করে রেখেছিলেন নির্বাসিত প্রেসিডেন্ট বাশার অল-আসাদ। এরকম শ'য়ে শ'য়ে বন্দিকে মুক্তি দিলেন হায়াত তাহির অল-শাম নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। এই জেলখানাকে 'কসাইখানা' বলে থাকেন বন্দিরা। 


২০১১ সালে সিরিয়ায় গণতন্ত্রপন্থী প্রতিবাদ শুরু হওয়ার পর থেকে যেসব রাজনৈতিক বন্দীরা এই জেলখানায় বন্দি ছিলেন, তাঁদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সেদিকে অগ্রসর হন বিদ্রোহীরা। অন্যদিকে, সরকারি আধিকারিকরা আতঙ্কে গা ঢাকা দেন। এদের জেলখানায় আটকে রেখেছিলেন বাসাদ। এমনই অভিযোগ। জেলখানা থেকে যারা মুক্তি পায়, সেই তালিকায় রয়েছে সেইসব মানুষ যাদের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার পর মনে করা হয়েছিল কোথাও উধাও হয়ে গেছেন। শাস্তির অপেক্ষায় থাকা বন্দিরাও মুক্তি পান।


বছর ৬৩-র লেখক বাশার বারহুম আশঙ্কায় ছিলেন, এবার হয়তো তাঁকে মৃত্য়ুদণ্ড দেওয়া হবে। তিনি ইতিমধ্যেই সাত মাস জেলে কাটিয়ে ফেলেছেন। এদিন মুক্তি পাওয়ার পর, তিনি কিছুটা স্তম্ভিত হয়ে যান। কারণ, বিদ্রোহীরা জেল থেকে তাঁকে মুক্তি দিলেও, তিনি ভেবেছিলেন, হয়তো আসাদের লোকেরাই এসেছে।


জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি দেখেন, দামাস্কাসের রাস্তায় বহু মানুষ, আসাদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়া উদযাপন করছেন। তা দেখে হতবাক হয়ে যাওয়া এই লেখক বাশার বারহুম সংবাদ সংস্থা দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-কে বলেন, "আজ পর্যন্ত সূর্য ওঠা দেখতে পাইনি। কাল মৃত্যুর পরিবর্তে, উপরওয়ালাকে ধন্যবাদ, তিনি আমাকে নতুন জীবন দিলেন।" নিজের ব্যক্তিগত জিনিস ও মোবাইল ফোন খুঁজে না পাওয়ায় তাঁর স্ত্রী-কন্য়াকে জানাতে পারেনি যে তিনি বেঁচে আছেন এবং সুস্থ আছেন।


দামাস্কাসের উত্তরে রয়েছে সায়াদনায়া সামরিক জেল। যেটা পরিচিত, 'মানুষের কসাইখানা' নামে। বিদ্রোহীরা এদিন সেই জেল ভেঙে যখন ঢোকেন তখন মহিলা ও শিশু-সহ শতাধিক বন্দি আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নোট-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১১ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে সিরিয়ার ১৩ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে গোপনে ডজন ডজন মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হত।


সেই জেল থেকে বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার সময় এক বিদ্রোহী বলে ওঠেন, "ভয় পাবেন না, বাশার আসাদের পতন হয়েছে। কেন আপনারা ভয় পাচ্ছেন ?" এদিকে বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে খবর পেয়ে, তাঁদের পরিবারের লোকজন ভিড় জমাতে শুরু করেন জেলখানার বাইরে। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।