উটি: ভরা পৌষে দিল্লি কাঁপলেও, কার্যত শুষ্ক কাশ্মীর। কিছু জায়গায় গুঁড়ো পড়ে থাকা ছাড়া, তুষারপাত থেকে বঞ্চিত ভূস্বর্গ। ফলে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা সেরে রেখেও, শেষ মুহূর্তে হোটেল বুকিং, ট্রেনের টিকিট বাতিল করতে হয়েছে পর্যটকদের। কাশ্মীরের এই পরিস্থিতির জন্য প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। এবার একই উলটপুরাণ দক্ষিণ ভারতেও। তামিলনাড়ুর একাধিক জায়গায় তাপমাত্রা ২ থেকে ০ ডিগ্রিতে নেমে গিয়েছে, যা অশনি সঙ্কেত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। (Tamil Nadu Temperature Drop)


নীলগিরি পর্বতমালা বরাবর তামিলনাড়ু একাধিক জায়গায় তাপমাত্রা একধাক্কা শূন্য বা শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই এই রীতি বজায় রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা সেখানে। ঘন কুয়াশার চাদের ঢেকে থাকতে দেখা গিয়েছে একাধিক এলাকাকে। দৃশ্যমানতা কমে গিয়েছে অনেকটাই। শীতকাল হলেও, এই হারে পারদপতন আগে কখনও চাক্ষুষ করেননি মানুষজন। এতে কৃষিকার্য যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনই প্রচণ্ড ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বহু মানুষ। (Winter in Tamil Nadu)


এত ঠান্ডার সঙ্গে অভ্যস্ত নন তামিলনাড়ুর মানুষ জন। তাই বাড়ি থেকে বেরনো প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হাতেগোনা কিছু মানুষকে নেহাতই প্রয়োজনে বেরোতে হচ্ছে। রাস্তার উপর জায়গায় জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে সেঁক নিতেও দেখা গিয়েছে অনেককে। কিন্তু ঠান্ডা হাওয়ার দাপটে তাতেও বিঘ্ন ঘটছে। চারপাশে নীরবতা নেমে এসেছে রাতারাতি। আগে কখনও এমন পরিস্থিতি দেখা দেয়নি বলে দাবি এলাকার মানুষজনের। 



আরও পড়ুন: Ram Mandir Ayodhya: রামের নামে স্মারক ডাকটিকিট! সঙ্গে ৪৮ পাতার বইয়ে ২০টি দেশের টিকিট


মৌসম ভবন থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান আনুযায়ী, বৃহস্পতিবার তামিলনাড়ুর কাঁঠল, থালাইকুণ্ঠে তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছে। বোটানিক্যাল গার্ডেনে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রির কাছাকাছি। সেন্ডিনল্লাহে তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রির কাছাকাছি। পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয় যে উটি, সেখানে তাপমাত্রা একধাক্কায় ০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি দক্ষিণ ভারতে এত ঠান্ডা অস্বাভাবিক বলে মত পরিবেশ এবং আবহবিদদের। 


নীলগিরি এনভারয়নমেন্ট সোশ্যাল ট্রাস্টের ভি শিবদাস জানিয়েছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং এল নিনোর প্রভাবেই আবহাওয়ার এমন পরিবর্তন। তিনি বলেন, "ঠান্ডার আঘমনই ঘটেছে দেরিতে। নীলগিরি অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিশদে গবেষণা প্রয়োজন।" তাপমাত্রার এই পতন চা বাগানগুলির উপরও প্রভাব ফেলছে বলে জানা গিয়েছে। ডিসেম্বরে প্রথমে বৃষ্টি, তার পর এই ভয়ঙ্কর ঠান্ডা, চাষের ক্ষতি করছে বলে জানিয়েছেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক আর সুকুমারন। চায়ের জোগানে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। এত ঠান্ডায় কপি চাষেরও ক্ষতি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।