পটনা: ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়া ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। সেই আবহেই বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিজয় কুমারের দু’-দু’টি ভোটার কার্ড রয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। তাঁর নামে দু’-দু’টি EPIC নম্বর রয়েছে বলে খোলসা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা তেজস্বী যাদব। সেই নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে। (Bihar Voter List Row)
বিহারের ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধনে প্রায় ৬৫ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। সেই নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে নির্বাচন কমিশন। এমনকি এত সংখ্যক মানুষের নাম বাদ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্টও। সেই আবহেই উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয়ের নামে দু’-দু’টি EPIC নম্বর সামনে এল। (Vijay Kumar Sinha)
বিজয়ের নামে থাকা দু’টি EPIC নম্বর নিয়ে তেজস্বী বলেন, “বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় সিনহা মোদিজির অতি ঘনিষ্ঠ। দুই পৃথক জেলায়, দুই পৃথক বিধানসভা ক্ষেত্রের ভোটার উনি। লখীসরায় জেলার লখীসরায় ক্ষেত্র এবং পটনা জেলার বাঁকীপুর বিধানসভা নির্বাচন কেন্দ্রের ভোটার উনি। দু’টি আলাদা আলাদা EPIC নম্বর রয়েছে ওঁর, লখীসরায়ে IAF3939337, বাঁকীপুরের AFS0853341’.
তেজস্বী আরও লেখেন, ‘দুই পৃথক কেন্দ্র থেকে দু’বার করে ভোট পড়ে। দুই জায়গায় বয়সও আলাদা লেখা। এক জায়গায় লেখা ৫৭, এক জাগায় ৬০। এটা কি বয়স নিয়ে জালিয়াতি নয়? দুই জায়গায় ওঁর স্বাক্ষর নেই। তাহলে কি নির্বাচন কমিশন নিজেই সই জাল করে এক ব্যক্তির নাম দুই জায়গায় তুলেছে? খসড়া তালিকায় দুই জায়গায় ওঁর নাম উঠল কী করে? বিজেপি-র জন্য কি এই প্যাটার্ন তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন’।
তেজস্বীর সাফ বক্তব্য, “হয় SIR পুরোপুরি জালিয়াতি, নয়ত উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় সিনহা নিজে জালিয়াতি করেছেন। ওঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা উচিত।” যদিও বিজয়ের দাবি, তিনি ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে একটি জায়গা থেকে নাম মুছে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। তেজস্বী মিথ্যে অভিযোগ করছেন বলেও দাবি তাঁর। বিজয় বলেন, “এক জায়গার ভোটার তালিকা থেকে নাম মুছতে ফর্ম ভরেছিলাম আমি। লখীসরায়ের তালিকায় নাম যুক্ত করি। বাঁকীপুর থেকে নাম সরানোর আবেদন জানাই।”
এর আগেও কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তেজস্বী। খসড়া ভোটার তালিকায় তাঁর নামই নেই বলে জানিয়েছিলেন। নিজের EPIC নম্বর প্রকাশ করে সর্বসমক্ষে তেজস্বী দেখিয়েছিলেন, কমিশনের তালিকায় নাম নেই তাঁর। পরে কমিশনের তরফে তেজস্বীর ভোটার কার্ডের ছবি প্রকাশ করা হলেও, তেজস্বীর দেওয়া EPIC-এর সঙ্গে তা মেলেনি। সেই নিয়েও কম তরজা হয়নি। তেজস্বীর দু’রকমের EPIC হল কী করে প্রশ্ন তোলে বিজেপি ও কমিশন। অন্য দিকে তেজস্বী জানান, তাঁর নামে দু’টি EPIC হল কী করে, তা দেখার দায়িত্ব কমিশনেরই। কমিশনের দক্ষতা এবং উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এবার স্বয়ং উপমুখ্যমন্ত্রীরই নামই পাওয়া গেল দুই জায়গার ভোটার হিসেবে।