নয়াদিল্লি: নিজের খামারে পুষে রাখা ১২৫ কুমিরকে হত্যা করলেন তাইল্যান্ডের এক কৃষক। যন্ত্রণা পুষে রেখে এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, বন্যায় জল থৈ থৈ অবস্থা তাঁর এলাকা। খামারবাড়ির দেওয়ালের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। লোকালয়ে ঢুকে মানুষের ক্ষতি করতে পারত কুমিরগুলি। তাই বুকে পাথর চাপিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাঁকে। (Thailand Crocodile Farmer)
উত্তর তাইল্যান্ডের লামফুনে এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমেরিকার CNN বিষয়টি সামনে এনেছে। ওই খামারবাড়ির মালিক নত্থাপক কুমকাদ জানিয়েছেন, একটানা ভারী বৃষ্টি হয়েই চলেছে তাঁর এলাকায়। এর ফলে তাঁর খামারবাড়ির এনক্লোজারটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানেই দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় প্রজাতির কুমিরগুলি পোষা হয়েছিল। বন্যা পরিস্থিতিতে দেওয়াল ভেঙে পড়লে কুমিরগুলি লোকালয়ে ঢুকে মানুষের ক্ষতি করতে পারে বলে আশঙ্কা দানা বাঁধে নত্থাপকের মনে। সেই মতো বিষপ্রয়োগ করে সেগুলিকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। (Thailand Crocodile Farmer)
সবমিলিয়ে ১২৫টি কুমিরকে হত্যা করেছেন নত্থাপক। সেগুলির দৈর্ঘ্য প্রায় তিন মিটার করে ছিল বলে জানা গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমে ওই যুবক বলেন, "ওদের হত্যা করা আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। পরিবারের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। দেওয়াল ভেঙে পড়লে কিছু করার থাকবে না। মানুষের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন জড়িয়ে।"
একসঙ্গে এত সংখ্যক কুমিরকে হত্যা করতে হল কেন, সেই নিয়ে যদিও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর প্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় খামারবাড়ির ছবি পোস্ট করেছেন নত্থাপক। তিনি জানিয়েছেন, পুকুরগুলি সংস্কারের চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু বৃষ্টি থামছিল না কিছুতেই। সাময়িক অন্যত্র সরিয়ে যাওয়ার ভাবনাও আসে। কিন্তু এত সংখ্যক কুমিরকে নিরাপদে কোথাও সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপায় মিলছিল না। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হতো। তাই শেষ পর্যন্ত চরম সিদ্ধান্ত নিতে হয়। পরিস্থিতি বেগতিক ছিল বলেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এখনও ৩০০ কুমির রয়েছে তাঁর কাছে।
এমনিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় কুমির সংরক্ষণের আওতায় পড়লেও, তাইল্যান্ডে কুমির চাষের প্রচলন রয়েছে এবং তা বেশ লাভজনকও। প্রায় ১১০০ নথিভুক্ত বাণিজ্যিক সংস্থা রয়েছে সেখানে যারা কুমির চাষ করে। বছরে কুমির চাষ থেকে সেখানে ২১ কোটি ডলারের বেশি আয় হয়। কুমিরের চামড়া বিক্রি হয় চড়া দামে, বিদেশে রফতানি হয় মাংস। আগে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বহু দেশেই এই কুমির চোখে পড়ত। তবে চাষ বাদ দিলে, এমনিতে ওই কুমিরের সংখ্যা কমে এসেছে। এ বছরের শুরুতে কম্বোডিয়ায় ৬০টি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় কুমির জন্মায়।