বাপন সাঁতরা, আরামবাগ: প্রকৃতির সঙ্গে অসম লড়াইয়ে ভরসা ভগবানই। সর্বগ্রাসী বন্যা কেড়ে নিয়েছে ভিটে-মাটি। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে আস্ত দুটি দোতলা পাকাবাড়ি। যদিও টলাতে পারেনি বাড়ির ভগবানকে। বাড়ির সম্পদ বলতে রয়ে গেছে কেবল তুলসি মঞ্চটুকুই। 


আরও পড়ুন: Medical College News: হাজার হাজার টাকায় সিসিইউ, জেনারেল বেড বিক্রি, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে দুর্নীতির অভিযোগ


খানাকুলের বন্দর উত্তরপাড়ার পোড়ে দম্পতি। ভিটেমাটি হারিয়ে এখন বাঁধে ত্রিপলের নিচেই বাস বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীর। অথচ কয়েকদিন আগেও মোজাইক করা বাড়িতে সুসজ্জিত পালঙ্কে ছিল তাঁদের জীবনযাপন। দুই ছেলের দোতলা পাথর বসানো বাড়ি তাঁদের কাছে ছিল অট্টালিকাসম। পাড়ায় গর্ব করে বলতেনও সেকথা। কিন্তু, ভাগ্যের পরিহাসে আজ তাঁরা রাস্তায়। 


আরও পড়ুন: Malda Flood Situation: বাংলায় হু হু করে বাড়ছে জল, মালদার মানিকচকে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা


তবু তাঁদের বিশ্বাস, ঠাকুর ঠিক মুখ তুলে চাইবেন। বিষণ্ণ মুখে তাঁদের একটাই চাওয়া,মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু দিক প্রশাসন। বাড়ির তুলসীমঞ্চে নিয়ম করে ভগবানকে ভোগ দিয়েছেন। তবুও হয়নি সুখভোগ। সাধের বাড়ির চিহ্ন মাত্র নেই। শুধু রয়ে গেছে তুলসী মঞ্চটি। আজও পোড়ে দম্পতি বাঁধের অস্থায়ী ছাউনি থেকে দু'বেলা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন বাড়ির তুলসি মঞ্চের দিকে। চেষ্টা করেন সাধের সুখনীড়ের অস্তিত্ব খোঁজার। শুধু বন্দর নয় সর্বগ্রাসী বন্যায় এমন অসহায়তার ছবি খানাকুলের দিকে দিকে।


প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রবল বর্ষণ ও ডিভিসি সহ একাধিক জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রচুর মানুষের ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি বিঘার পর বিঘা চাষের জমি চলে গেছে জলের তলায়। এর ফলে সমস্যায় পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। হুগলি জেলার খানাকুলের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সেখানকার প্রচুর মানুষ ঘরছাড়া হওয়ার পাশাপাশি সর্বশ্রান্ত হয়ে পড়েছেন। রাজ্যের একাধিক জায়গা প্লাবিত হওয়ার জন্য দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন ও কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বন্যা পরিস্থিতিকে ম্যানমেড বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: Sukanta Majumdar: গাড়ি হাঁকিয়ে বন্যা দেখতে গেলেও নামমাত্র ত্রাণ বিলির অভিযোগ, ডেবরায় সুকান্তর বিরুদ্ধে ক্ষোভ