চেন্নাই: অভিনয় থেকে রাজনীতিতে পদার্পণ। শুরুটা ঠিক হলেও, এবার বড় বিতর্কে জড়ালে দক্ষিণের অভিনেতা থলপতি বিজয়। রাজীব গাঁধীর হত্যাকারীর প্রশংসা করে বসলেন তিনি। ভারতে বসবাসকারী, শ্রীলঙ্কা থেকে আসা তামিলদের অধিকারের দাবিতেও সরব হলেন তিনি। (Thalapathy Vijay)

Continues below advertisement

নির্বাচনমুখী তামিলনাড়ুতে রাজনৈতিক পারদ চরমে উঠছে। সেই আবহেই শনিবার নাগাপ্টিনমে নিজের দল তামিঝাগা ভেত্রী কাঝগম (TVK)-এর হয়ে প্রচার করেন বিজয়। সেখানে শ্রীলঙ্কা থেকে আসা তামিলদের হয়ে সওয়াল করেন তিনি। Liberation Tigers of Tamil Eelam (LTTE)-র প্রাক্তন প্রধান বেলুপিল্লাই প্রভাকরণের প্রশংসা করেন বিজয়। (Rajiv Gandhi)

শ্রীলঙ্কা থেকে বহু যুগ আগে ভারতে চলে আসা তামিলদের উদ্দেশে বার্তা দিতে গিয়ে প্রভাকরণকে ‘মায়ের মতো’ বলে উল্লেখ করেন বিজয়। তামিলনাড়ুর নাগাপট্টিনম এলাকায়, বিশেষ করে মৎস্যজীবীদের মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে আসা তামিলরা অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি বিষয়। সেই নিয়ে বিজয় বলেন, “শ্রীলঙ্কা থেকে আসুন বা পৃথিবীর অন্য কোনও জায়গা থেকে, ইলাম তামিলদের সঙ্গে আমাদের নাড়ির সংযোগ। মায়ের মতো ভালবাসতেন যে নেতা, তাঁকে হারানোর যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছেন ওঁরা। ওঁদের জন্য সরব হওয়া আমাদের কর্তব্যের মধ্য়ে পড়ে।”

Continues below advertisement

এমকে স্ট্যালিন সরকারকে নিশানা করে বিজয় বলেন, “আমরা DMK সরকারের মতো নই, যারা মৎস্যজীবীদের নিয়ে লম্বা চিঠি লিখেই চুপ করে যায়। মৎস্যজীবীদের সমস্যার সমাধান করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য়। আমাদের মৎস্যজীবীদের উপর শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর হামলা নিয়ে মাদুরাই সম্মেলনেও কথা বসেছি আমি। মৎস্যজীবীদের পাশে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য।”

এর আগেও শ্রীলঙ্কা থেকে আসা তামিলদের সমর্থনে মুখ খুলতে শোনা গিয়েছে বিজয়কে। শ্রীলঙ্কায় ওই সম্প্রদায়ের উপর নৃশংসতার প্রতিবাদে ২০০৮ সালে চেন্নাইয়ে অনশনেও বসেন অভিনেতা। তবে এদিন সরাসরি প্রভাকরণের প্রশংসা করায় বিজয়ের উপর রুষ্ট হয়েছেন অনেকেই। 

গৃহযুদ্ধের সময় শ্রীলঙ্কা থেকে পালিয়ে আসেন বহু তামিল মানুষ। নয়ের দশক থেকে ভারতে নিষিদ্ধ LTTE একসময় শ্রীলঙ্কার উত্তর এবং পূর্বভাগ শাসন করত। স্বাধীন তামিল রাষ্ট্র গঠনের জন্য বহু দশক ধরে লড়াই চালিয়ে যায় তারা। কিন্তু ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার কাছে পরাজয় হয় তাদের। ওই বছরই প্রভাকরণের মৃত্যু হয় শ্রীলঙ্কার সেনার হাতে। 

প্রভাকরণ এবং প্রধান চর, পট্টু আম্মান ১৯৯১ সালে রাজীব গাঁধীকে হত্যার ছক কষে। ১৯৮৭ সালে শ্রীলঙ্কায় যে ‘Peacekeeping Force’ পাঠানো হয়, তার প্রতিশোধ নিতেই রাজীব গাঁধীকে হত্যার ছক কষা হয়েছিল। খাতায়কলমে কখনও রাজীব গাঁধীকে হত্যার দায় স্বীকার করেনি LTTE. তবে শ্রীলঙ্কা থেকে আসা তামিল এক মহিলাই ১৯৯১ সালে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রাজীব গাঁধীকে হত্যা করে।

রাজীব গাঁধীর মৃত্যুর পর LTTE ভারতে নিষিদ্ধ হয়। তার আগে পর্যন্ত তামিলনাড়ুতে ওই সংঠনের ঘাঁটি ছিল এবং সাত ও আটের দশকে ভারত সরকারও তাদের প্রতি সমব্যথী ছিল।