নয়াদিল্লি: দিল্লির সীলমপুরের রাস্তায় গত ৩২ বছর ধরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন গঙ্গারাম। অর্থ উপার্জনের জন্য নয়। এর পিছনে রয়েছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। সীলমপুরেরই এক সিগন্যালের সামনে রাস্তা পার হতে গিয়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল গঙ্গারামের একমাত্র পুত্র। ছেলের দুঃখে এক সময়ে তাঁর স্ত্রীও মারা যান। ভরা সংসার আচমকা ধূ ধূ হয়ে যাওয়ায় একেবারে একা গঙ্গারাম নিজের জীবনকে বইয়ে দেন অন্য খাতে। ওই সিগন্যালে তিনি শুরু করেন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ।


একসময়ে ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করতেন গঙ্গারাম। লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিভি, ফ্রিজ, পাখা ইত্যাদি সারাতেন। ছেলেও যোগ দিয়েছিল ব্যবসায়। বাপ-ব্যাটা মিলে কাজে বার হতেন। সুখের দিন ছিল সে সব। হঠাৎ একদিন পুলিশ এসে তাঁর ছেলের মৃত্যুর খবর দিল। জীবনটাই বদলে গেল পুরোপুরি। তারপর থেকে প্রতিদিন হাতে লাঠি নিয়ে, পুলিশের মতো করে ইউনিফর্ম পরে সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ট্রাফিক কন্ট্রোল করা শুরু করেন গঙ্গারাম। এভাবেই চলছে গত ৩২ বছর ধরে। তাঁর বয়স এখন ৭২। মার্চ থেকে লকডাউনে পথে অনেক কম বার হচ্ছেন মানুষ। আবহটাই বদলে গিয়েছে। শুধু এক রকম রয়ে গিয়েছেন গঙ্গারাম। এখনও ট্রাফিক সিগনালে একভাবে এসে চলেছেন তিনি।

১৫ আগস্ট, ২৬ জানুয়ারির মতো দিনগুলিতে বহু সামাজিক সংগঠন নানা সময়ে সংবর্ধিত করেছে গঙ্গারামকে। কাজে সাহায্যের জন্য পুলিশ তাঁকে একটি মোবাইল ফোনও উপহার দিয়েছে।