নয়াদিল্লি: গত অগাস্টের ঘটনা। মধ্যপ্রদেশের পান্না টাইগার রিজার্ভের কেন নদীতে ভাসতে দেখা গিয়েছিল মুণ্ডহীন একটি বাঘের দেহ, যার যৌনাঙ্গ, একটিও নখ ছিল না।


এমন ঘটনায় তাজ্জব হয়ে যান বন দফতরের কর্তারা। কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে বাঘটিকে এভাবে মারল ,তা বুঝে উঠতে পারছিল না বন দফতর। অবশেষে সেই কাণ্ডের কিনারা করে ফেলল মধ্যপ্রদেশের ব্যঘ্র সংরক্ষণ বাহিনী (এসটিএসএফ)। ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে তারা।


অভিযুক্তরা কেন নদীর ধারে পালকোহা গ্রামের বাসিন্দা। শুধু নৌকার মাধ্যমে যাতায়াত করা যায় ওই গ্রামে। আচ্ছেলাল নামে ওই গ্রামের এক ব্যক্তি এই কাণ্ডের আসল মাথা বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।


বন দফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, আরেকটি বাঘের সঙ্গে লড়াইয়ে "পি১২৩" নামাঙ্কিত বাঘটি নদীতে ডুবে মারা যায়। ৮ অগাস্ট বাঘের দেহটি দেখতে পায়  আচ্ছেলাল।


তাঁর সঙ্গী ছিল ঘনশ্যাম কুশওয়াহ,নাথু রায়কোয়ার। এরা তিনজন মিলে বাঘের দেহটিকে টেনে নিয়ে আসে। এরপর একে একে অঙ্গচ্ছেদ করে।


আলাদা করে ফেলা হয় বাঘের মাথা। উপড়ে নেওয়া হয় নখ। এমনকি যৌনাঙ্গ কেটে নেওয়া হয়। আচ্ছেলাল ও রায়কোয়ার মিলে বাঘের মাথাটিকে ক্ষেতে টাঙিয়ে রেখেছিল, যাতে গবাদি পশুদের ভয় দেখানো যায়।


আচ্ছেলালের ধারণা ছিল, বাঘের মাথা, যৌনাঙ্গ ও নখের মাধ্যমে লিবিডো বা যৌন উত্তেজনা বাড়ানো যায়। সেই উদ্দেশ্য সিদ্ধ করতেই বাঘের অঙ্গচ্ছেদ করেছিল সে।


অন্যদিকে মুণ্ডহীন দেহ খুঁজে পাওয়ার পরই বন দফতর তদন্ত শুরু করে। তদন্তের আঁচ পেয়েই আচ্ছেচলকে প্রমাণ লোপাট করে দেওয়ার পরামর্শ দেয় গ্রামেরই বাসিন্দা কুশওয়াহা।


এরপরই বাঘের মাথাটি তারা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। শিকারী কুকুরের সাহায্যে এই তিনজনের সন্ধান পেয়ে যায় বন দফতর।


গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত তিনজনকেই। জেরায় তারা অপরাধ কবুল করেছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। প্রথমে বাঘের মুণ্ড দেখতে পাওয়ায় বনকর্তারা ভেবেছিলেন, এটা হয়তো কোনও চোরাশিকারীর কাজ। পরে গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়।


তবে এটাই প্রথম নয়। এর আগেও ছটি বাঘ মারা গিয়েছে। ২০০৫ সালে ঠিক এ ভাবেই একটি মুণ্ডহীন বাঘের দেহ খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল পান্না টাইগার রির্জাভের কেন নদীতে।