দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন মাথায় রেখে এবার ব্রাহ্মণ ভোজনের আয়োজন করলেন গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। আর যথারীতি যেভাবে ধীরে ধীরে ধর্মের রাজনীতি বঙ্গ রাজনীতির অঙ্গে পরিণত হচ্ছে, তাতে তৃণমূল বিধায়কের ব্রাহ্মণ ভোজন নিয়েও রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সোমবার তৃণমূল বিধায়কের উদ্যোগে ৪০০ ব্রাহ্মণকে খাওয়ানো হয়। ব্রাহ্মণ পিছু প্রণামী হিসাবে তুলে দেওয়া হয় ১০০১ টাকা। যাতায়াতের জন্য দেওয়া হয় ৫০০ টাকা। সঙ্গে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়, ধুতি-পাঞ্জাবি, শীতবস্ত্র, গীতা ও নামাবলী।
সেপ্টেম্বরে সনাতনী দরিদ্র ব্রাক্ষণদের জন্য অক্টোবর থেকে মাসিক ১ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, গরিব ব্রাহ্মণরা এখনও পর্যন্ত একাধিকবার দেখা করেছিলেন, সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। অনেকে মন্দিরে পুজো করেন। কিন্তু গরিব। সংসার চালানো দুষ্কর। তাই সেই আবেদনের ভিত্তিতে সনাতন ব্রাহ্মণদের সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই প্রেক্ষাপটেই গরিব ব্রাহ্মণদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ গোসাবার বিধায়কের। তাঁর আয়োজন করা অনুষ্ঠানে আপ্যায়ন, খাতির, যত্নে বেজায় খুশি ব্রাহ্মণরা।
ব্রাহ্মণভোজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত উচ্ছ্বসিত বেণুগোপাল পাণ্ডা নামে জনৈক ব্রাহ্মণ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এভাবে আর কেউ আমাদের কথা ভাবেনি। বিধায়ক আমাদের জন্য এসব আয়োজন করেছেন। আমরা দুহাত তুলে আশীর্বাদ করছি তাঁকে।
ব্রাহ্মণ ভোজনের আয়োজন নিয়ে তৃণমূল বিধায়ককে তীব্র শ্লেষে বিঁধে স্থানীয় বিজেপি নেতা ও দলের রাজ্য কমিটির সদস্য পবিত্র সাঁপুইয়ের মন্তব্য, সনাতন ধর্মের জন্য উনি কাজ করছেন বলে খুশি। তবে উনি তো নিজের রাজনৈতিক জীবনে অনেক পাপ করেছেন। এবার সেগুলো মোচনের জন্যই এসব আয়োজন করছেন!
পাল্টা দলের তরফে নয়, ব্যক্তিগত উদ্যোগেই এই আয়োজন করেছেন বলে বিতর্কের মুখে সাফাই দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। বলেছেন, গৃহপ্রবেশ উপলক্ষে আমি ব্রাক্ষণ ভোজন করিয়েছি। আমি আমার রাজনৈতিক জীবনে অজান্তেই হয়তো অনেক পাপ করেছি। তাছাড়া ব্রাহ্মণরা তো বরাবরই অবহেলিত, তাই নিজের হাতে এসব তুলে দিয়ে হাল্কা বোধ করছি।
বিজেপির রাম নবমী পাল্টা তৃণমূলের হনুমান পুজো! গেরুয়া শিবিরের দুর্গাপুজো কিংবা ‘রাম বঙ্গ জীবনের অঙ্গ’ স্লোগান তুলে অনুষ্ঠান! আবার কখনও অনুব্রত মণ্ডলের পুরোহিত সম্মেলন কিংবা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের টোল পণ্ডিতদের সঙ্গে বৈঠকে বসা। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, গত কয়েক বছরে দু’দলের হাত ধরে পুরো দস্তুর ধর্মের রাজনীতির প্রবেশ ঘটেছে এ রাজ্যে! ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই ধর্ম নিয়ে একে অপরকে টক্কর দেওয়ার কার্যত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।