কলকাতা : আগেই অপারেশন 'সিঁদুর' নিয়ে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলে, ইউসুফ পাঠান-সহ কোনও সাংসদকেই না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল। দলের পক্ষ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উভয়ই প্রশ্ন তোলেন, বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের নাম কেন কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করবে? এই কারণেই ইউসুফ পাঠান-সহ তৃণমূলের কোনও সাংসদকেই কেন্দ্রের প্রতিনিধি দলে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সূত্রের খবর তারপরই এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তিনি তখন সিদ্ধান্তবদল করেন।
সূত্রের খবর, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর ফোন পেয়ে সিদ্ধান্ত বদলান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের নাম প্রস্তাব করেন তিনি। সেখান খান থেকেই এখন মনে করা হচ্ছে, অপারেশন 'সিঁদুর' নিয়ে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলে এবার যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশাল মিডিয়ায় অভিষেককে শুভেচ্ছা বার্তাও জানানো হয়েছে অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে। লেখা হয়েছে, 'আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলের জন্য সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মনোনিত করেছেন। যিনি বিশ্বের সামনে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার অংশগ্রহন করবেন। যখন সারা বিশ্বের একত্রিত হয়ে সন্ত্রাসবাদের ত্রমবর্ধমান হুমকির মোকাবিলা করা প্রয়োজন, তখন অভিষেক অন্তর্ভুক্তি স্পষ্টতই দৃঢ় পদক্ষেপ। তাঁর উপস্থিতি শুধু বাংলার সন্ত্রাসবিরোধী কঠোর অবস্থানকে তুলে ধরবে না, বরং আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের সম্মিলিত কণ্ঠকে আরও জোরদার করবে।'
সারা বিশ্বের কাছে পাকিস্তান কীভাবে জঙ্গি কার্যকলাপে মদত দিচ্ছে, ভারত কীভাবে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে জিরো-টলারেন্স নীতি নিয়েছে, তা নিয়ে বিভিন্ন দেশে তথ্য তুলে ধরবেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এর আগে কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়। শুক্রবার মোদি সরকারের তরফে কংগ্রেসের কাছে চারটি নাম পাঠাতে বলা হয়। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের প্রস্তাবিত তালিকায় নাম ছিল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মা, লোকসভায় কংগ্রেসের উপ-দলনেতা গৌরব গগৈ, রাজ্যসভার সাংসদ সৈয়দ নাসির হুসেন এবং রাজ্যসভার আর এক সাংসদ রাজা ব্রার-এর। কিন্তু শনিবার সকালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে, দেখা যায়, সেখানে নাম রয়েছে কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের। যাঁর নাম কংগ্রেসের প্রস্তাবিত তালিকায় ছিলই না।
অন্যদিকে সোমবার পহেলগাঁওকাণ্ড নিয়ে সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রীকে তৃণমূল সাংসদ প্রশ্ন করেন, ৪ জন জঙ্গি কীভাবে ভারতে ঢুকেছিল? তারা বর্তমানে কোথায়? তারা কি ধরা পড়েছে? নাকি তাদের শনাক্ত করে হত্যা করা হয়েছে? বিদেশ সচিব তাঁকে জানান, এটা তাঁর মন্ত্রকের বিষয় নয়, নিরাপত্তা এবং সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয় প্রতিরক্ষা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংঘর্ষবিরতি মন্তব্যে আপত্তি জানাতে ভারত কি তার কূটনৈতিক পদ্ধতি ব্যবহার করেছে? তৃণমূল সাংসদের এই প্রশ্নের সরাসরি কোনও উত্তর দেননি বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রী।