সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: রাজ্যপালের বিরুদ্ধে থানায় থানায় ডায়রি করুন। মেয়াদ শেষের পর প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হবে। বিস্ফোরক তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মানুষেই তৃণমূল সাংসদের বক্তব্যের বিবেচনা করবেন। পাল্টা ট্যুইট করেছেন রাজ্যপাল।


শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ বলেছেন, সবাই থানায় থানায় ডায়েরি করে রাখুন। যেদিন রাজ্যপাল থাকবেন না, সেদিন কেস স্টার্ট করা যাবে, তখন প্রেসিডেন্সি জেলে ঢোকানো যেতে পারে।


রাজ্যে তৃতীয়বার তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠনের শুরু থেকেই আইনশৃঙ্খলা ইস্যুতে রাজভবন-নবান্নের সংঘাত তুঙ্গে উঠেছে। এবার নারদকাণ্ডে চার হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী-বিধায়কের গ্রেফতারি ঘিরে রাজ্যপালকে কড়া আক্রমণ করলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।  


জগদীপ ধনকড়ের বিরুদ্ধে থানায় থানায় ডায়েরি করার কথা বললেন। এমনকি তাঁর মুখে শোনা গেল জেলে ঢোকানোর হুঁশিয়ারিও।সোমবার নারদ মামলায় চার্জশিট পেশের দিন সকালে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম,মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বাড়িতে থেকে তুলে এনে গ্রেফতার করে সিবিআই।


গত ১০ মে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৪৩ জন মন্ত্রী শপথ নেন। তৃণমূলের অভিযোগ, বিধানসভার অধ্যক্ষকে এড়িয়ে তার আগের রাতে এই চার হেভিওয়েটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়েরের জন্য সিবিআইকে সম্মতি দেন রাজ্যপাল।


কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন যে, রাজ্যপাল নিজে গ্রেফতার করিয়েছেন। জানুয়ারিতে সিবিআই অনুমতি চেয়ে চাইতে রাজ্যপালকে চিঠি পাঠিয়েছে, কেন? সেটা তো আইন বলে না। রাজ্য সরকারের কাছে আসবে। ক্যবিনেটে আলোচনা হবে। তারপর রাজ্যপালের কাছে আসবে। সরকার সেটা মানতেও পারে, নাও মানতে পারে। জানুয়ারি থেকে যেটা বকেয়া ছিল, ৭ মে তা সরাসরি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।


এই প্রেক্ষাপটে বলতে গিয়েই এদিন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে থানায় থানায় অভিযোগ দায়ের করার কথা বলেন তৃণমূল সাংসদ।


উল্টোদিকে, তৃণমূল সাংসদের এই বক্তব্যের ভিডিও পোস্ট করেই পাল্টা ট্যুইট করেন রাজ্যপাল।কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে তিনি লেখেন, উনি (কল্যাণ) তৃণমূল কংগ্রেসের একজন বিশিষ্ট কার্যকর্তা। একজন সাংসদ। একজন আইনজীবী।তাঁর বক্তব্যে আমি হতবাক হয়ে গেছি।বাংলার সংস্কৃতিমনা মানুষের উপরই বিষয়টি বিবেচনার জন্য ছেড়ে দিলাম। 


রাজ্যপালের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল সাংসদকে নিশানা করেছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, এভাবে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে আক্রমণ করা হয়েছে। এটাই যদি তৃণমূলের বক্তব্য হয়, তাহলে ওদের সংবিধানে কোনও আস্থা নেই।  উনি সাংসদ, তৃণমূল নেতা, এটা তৃণমূলের বক্তব্য ধরে নিতে পারি। এই বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে তৃণমূল সংবিধান মানে না, সংবিধানে আস্থা নেই।


২০১৯ এর ৩০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন জগদীপ ধনকড়।৫ বছর থাকার পর, ২০২৪-এর ওই সময়েই তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।