নয়াদিল্লি : 'এক দেশ এক ভোট' নিয়ে রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। 'এক দেশ, এক ভোটের' পক্ষে নয় তৃণমূল কংগ্রেস। 'দলত্যাগ বিরোধী আইন শক্তিশালী করা হোক' বলে দাবি জানান সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বাজেটের জন্য দিল্লি সফর বাতিল করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বৈঠকে যোগ দেন সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি 'এক দেশ এক ভোট অগণতান্ত্রিক' বলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।


সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা One Nation One Election-এর পক্ষে নই। আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছি, আমাদের দেশে প্রেসিডেন্সিয়াল ফোরাম অফ গভর্নমেন্ট প্রণয়ন করার একটা উদ্যোগ শুরু হয়েছে। তারই পদক্ষেপ হিসাবে এই হিডেন এজেন্ডা। যেটা খুব সহজভাবে আজ আনা হচ্ছে। স্বৈরাচারী এই সিদ্ধান্তকে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে নিয়ে তাকে পরবর্তীকালে তার প্রকৃত রূপ দেওয়া হবে। সুতরাং আমরা মনে করি না, ভারতের মতো দেশে এধরনের কোনও বিষয় বাস্তবায়ন করা উচিত। "


এক দেশ এক ভোট প্রসঙ্গে আপত্তি জানিয়ে, গত মাসেই কেন্দ্রের সচিবকে চিঠি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। যেখানে তিনি প্রশ্ন তোলেন, সংবিধান প্রণেতারা যেখানে 'এক দেশ এক সরকার'-এর মতো ধারণার উল্লেখ করেননি, সেখানে আপনারা কী করে 'এক দেশ এক ভোট'-এর ধারণায় পৌঁছোলেন? এনিয়ে পাল্টা সুর চড়ায় বিজেপি-ও।


এক দেশ এক ভোট’ নিয়ে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘এক দেশ এক ভোট’ সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সচিব নীতেন চন্দ্রকে চিঠি দিয়েও নিজের আপত্তির কথা জানান তিনি। 


লোকসভার সঙ্গেই বিধানসভা নির্বাচন করা যায় কি না, তা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলির মতামত জানতে চেয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তাতে আপত্তি জানিয়ে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় চিঠিতে লিখেছিলেন, এক্ষেত্রে 'এক দেশ'-এর ধারণাটা কী? ভারতীয় সংবিধান কি 'এক দেশ এক সরকার'-এর ধারণা অনুযায়ী চলে? আশঙ্কার সঙ্গে বলছি, চলে না। সংবিধানে ভারতকে ষুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তাই ভারতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বহু রাজ্য় সরকার রয়েছে। সংবিধান প্রণেতারা যেখানে 'এক দেশ এক সরকার'-এর মতো ধারণার উল্লেখ করেননি, সেখানে আপনারা কী করে 'এক দেশ এক ভোট'-এর ধারণায় পৌঁছোলেন? মূল বিষয়টির সমাধান না করে, এই চিত্তাকর্ষক শব্দবন্ধ নিয়ে কোনও চূড়ান্ত দৃষ্টিভঙ্গিতে পৌঁছোনো কঠিন।