কলকাতা : "গদ্দারদের দলে নেব না ।" মুকুল রায়ের দলে প্রত্যাবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই তৃণমূল-ত্যাগী অন্যদের 'ঘর ওয়াপসি' নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। কিন্তু, আজ তৃণমূল ভবনে নেত্রী সরাসরি জানিয়ে দিলেন, তাঁদের আমরা নেব না।


এপ্রসঙ্গে তৃণমূল নেত্রী বলেন, "ভোটের সময় মুকুল আমাদের দলবিরোধী একটাও কথা বলেননি। যাঁরা ভোটের সময় গদ্দারি করে বিজেপির হাত শক্তিশালী করতে গিয়েছেন এবং গদ্দারি করেছেন, তাঁদের আমরা নেব না-এটা আমাদের দলের সিদ্ধান্ত। মনে রাখবেন, চরমপন্থী এবং নরমপন্থী আছে। মুকুলের সঙ্গে অনেকেই গেছেন। মুকুল চলে আসায়, তাঁরাও চলে আসতে চাইবেন। কিন্তু, যাঁরা চরমপন্থী, নিম্ন রুচির পরিচয় দিয়েছেন, তাঁদের আমরা নেব না।"


ভাঙনটা শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে। তৃণমূলের 'সেকেন্ড ইন কমান্ড'-ই ছেড়ে দেন ঘাসফুল শিবির । গায়ে তুলে নেন গেরুয়া জার্সি। তার পর থেকে পুরানো দলের সঙ্গে বৈরিতা বেড়েছে। কিন্তু, তাঁকে সেঅর্থে কখনও পুরানো দলবিরোধী মন্তব্য করতে শোনা যায়নি বলে দাবি করে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এদিকে বিজেপিতে সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পদ পেলেও, সেঅর্থে তাঁকে বিধানসভা নির্বাচনে কাজে লাগানো হয়নি বলে অনেকেরই মত। তাই হয়ত ভিতরে ভিতরে অসন্তোষ দানা বাঁধছিল। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচারে একসময়ের সহকর্মীকে 'বেচারা মুকুল' বলেও বর্ণনা করেন মমতা। এর পর দিনকয়েক আগে মুকুলের অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখতে যাওযা, সব নিয়ে মুকুলের প্রতি তৃণমূলের তরফেও একটা ইতিবাচক বার্তা ছিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শেষমেশ তাতেই সিলমোহর পড়ে।


কিন্তু, মুকুলের বিজেপি যোগের পর পরই সবচেয়ে বড় হয়ে উঠছে যে প্রশ্নটা, তা হল এবার কি তবে তৃণমূলের একসময়ের অন্য হেভিওয়েটরাও ধীরে ধীরে পুরানো দলে ফিরবেন ? বিধানসভা ভোটের আগে একে একে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন- শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল, বৈশালী ডালমিয়া, সুনীল মণ্ডল, অর্জুন সিং, শীলভদ্র দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যর মতো তাবড় নেতারা। এই তালিকার মধ্যে দু'-একজন ইতিমধ্যেই সুর নরম করেছেন। তবে কি তাঁরাও ফিরতে চাইছেন ? এনিয়ে জল্পনার মধ্যে দলের অবস্থান জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো।