আশাবুল হোসেন, কলকাতা: দুই রাজ্যে, দুই ছবি? 
বাংলায় যখন বেলাগাম হিংসার (Panchayat Poll Violence) অভিযোগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নাগাড়ে সুর চড়াচ্ছে সিপিএম-কংগ্রেস (CPIM-Congress), তখনই কর্নাটকে (Karnataka) একমঞ্চে এলেন সোনিয়া গাঁধী-সীতারাম ইয়েচুরি-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-বিরোধিতায় '২৪-এর সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুর বৈঠকে নতুন নামকরণও হল ২৬ দলের জোটের। দুই রাজ্যে দু'রকম ছবি কেন? প্রশ্ন দানা বাঁধতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে। বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও (Narendra Modi) । 


রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতি পৃথক বাধ্যবাধকতা?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন বলেন, 'ওখানে (বাংলায়) কংগ্রেস ও বাম কর্মীরা বাঁচার জন্য আর্তি জানাচ্ছেন। কিন্তু, কংগ্রেস ও বাম নেতারা নিজেদের স্বার্থে, তাঁদের কর্মীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। আপনারা দেখেছেন, যে কিছু দিন আগেও পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। সেখানে সারা রাজ্যে হিংসা হয়েছে, লাগাতার খুনোখুনি হচ্ছে, এরপরও ওদের সবার (বিরোধীদের) মুখে কুলুপ।' তথ্য বলছে, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৫৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে যেমন তৃণমূলকর্মীরা রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন বিরোধী দলের কর্মীরাও। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, নিহতদের মধ্যে কংগ্রেসের ৭ জন ও সিপিএমের ৪ জনও রয়েছেন। এই অবস্থায়, বেঙ্গালুরুতে মমতার পাশে রাহুল, মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং সীতারাম ইয়েচুরিকে দেখে ক্ষোভ চেপে রাখতে পারছেন না নিহতদের পরিবারের অনেকেই। শুধু তাই নয়। এই অবস্থায় বাংলায় কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারা কী করবেন, তা নিয়েও বিস্তর জল্পনা তৈরি হয়েছে। তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, 'সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছি, লড়ব।' কিন্তু একই সঙ্গে বিজেপি তথা প্রধানমন্ত্রীকেও কড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, 'নরেন্দ্র মোদি আরেক রাজনৈতিক ধান্দাবাজি করে চলেন। তাঁর মনে হচ্ছে, যখন বাংলার একের পর এক বিরোধী দলের কর্মীরা মার খাচ্ছে, জেলে যাচ্ছে, তখন বাংলার কংগ্রেস ও বামেদের, তৃণমূলের প্রতি ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছি লড়ব। আমাদের সেন্টিমেন্টকে বাঁকা পথে মোদি নিজের ধান্দাবাজিতে ব্যবহার করছেন, তাতে সফল হবেন না।'
মঙ্গলবার রাহুল গান্ধী, সীতারাম ইয়েচুরিরা যেভাবে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে নিয়ে বিরোধী জোটের বৈঠক করেছেন, তা নিয়ে সরব হতে দেরি করেনি বিজেপি। শুভেনদু অধিকারী ট্য়ুইট করে বলেছেন,'বাংলায় কুস্তি, বেঙ্গালুরুতে দোস্তি !!! কর্মীরা খাবে পেটো, গুলি, রড-লাঠি, আর নেতাদের বরাদ্দ মুচমুচে ফিশ ফ্রাই? কি রাজনীতি রে ভাই !' গোটা বিষয়টায় সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের বক্তব্য, 'আরএসএস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, (Mamata Banerjee) দু'পক্ষেরই প্রধান শত্রু বামেরা। তাই বাম ও কংগ্রেসকে একঘরে করে দেওয়ার জন্য এটা আরএসএস ও তৃণমূলের পরিকল্পনা।'

সব মিলিয়ে তরজা শুরু পুরোদমে। রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতা কি সত্যিই এত আলাদা?


আরও পড়ুন:দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি কি ধাক্কা দেবে ধানের ফলনে? আশঙ্কা নানা মহলে