মুম্বই: ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি মুম্বই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, বলেছিলেন, তাঁর ছেলের জীবন বিপন্ন। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সুশান্ত সিংহ রাজপুতের বাবা কেকে সিংহ এই অভিযোগ করলেন। তাঁর দাবি, মুম্বই পুলিশ তাঁকে চাপ দেয় বিহার পুলিশের কাছে যেতে।
সুশান্তের বাবার দাবি, ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলে ভীষণ সঙ্কটে রয়েছে। ১৪ জুন সুশান্ত মারা যান, তিনি কয়েকজনের নামে পুলিশে অভিযোগ করেন। কিন্তু ৪০ দিনের বেশি কেটে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই তিনি পটনায় এফআইআর দায়েরে বাধ্য হয়েছেন, পটনা পুলিশ সময় নষ্ট না করে কাজে নেমেছে।
রিয়া চক্রবর্তীর কথা বলে তিনি বলেছেন, অভিযুক্ত পালিয়ে বেড়াচ্ছে, পটনা পুলিশকে সাহায্য করা হচ্ছে না। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও তাঁর সহকর্মী সঞ্জয় ঝা এই দুঃখের দিনে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
যদিও মুম্বইয়ের ডেপুটি কমিশনার (অপারেশনস) শাহজি উমাপের দাবি, ২৫ ফেব্রুয়ারি এমন কোনও অভিযোগ বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনে জমা পড়েনি। তবে সুশান্তের ভগ্নীপতি আইপিএস ওপি সিংহতৎকালীন ডিসিপি জোন ৯-কে এ ব্যাপারে একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠান। ডিসিপি জোন ৯ ওপি সিংহকে ডাকেন, বলেন, এ ধরনের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ অত্যাবশ্যক। ওপি বলেন, তিনি সমস্যাটা ব্যক্তিগত স্তরে মেটাতে চান, ডিসিপি বলে দেন, সেটা অসম্ভব।
বিহার পুলিশে সুশান্তের বাবার অভিযোগ, সুশান্তের বান্ধবী রিয়া তাঁর ছেলের মুম্বইয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা বেআইনিভাবে নিজের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেন, মানসিকভাবে নিগ্রহ করছিলেন তাঁকে। যদিও মুম্বই পুলিশ প্রধান পরমবীর সিংহের দাবি, রিয়া যে বেআইনিভাবে সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরান তার কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি। সুশান্তের মৃত্যুর ২ দিন পর তাঁর পরিবার যে বিবৃতি দেয় তাতেও রিয়ার বিরুদ্ধে তাদের ছেলের টাকা তছরূপের কোনও উল্লেখ করেনি তারা।
সুশান্ত মৃত্যু রহস্য নিয়ে বিহার ও মহারাষ্ট্র পুলিশের মধ্যে রীতিমত দড়ি টানাটানি চলছে। বিহার পুলিশের বক্তব্য, তারা এই টাকা তছরূপ ও সুশান্তের মৃত্যুর ৬ দিন আগে প্রাণ হারানো তাঁর প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের মৃত্যু রহস্যও গোটা ঘটনার তদন্তে যোগ করতে চায়। সুশান্ত রিয়া ও তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে দুটি সংস্থা খুলেছিলেন, সে ব্যাপারেও তদন্ত করতে চায় তারা। কিন্তু মুম্বই পুলিশ তাদের এই তদন্তে নাক গলাতে দিতে নারাজ, তাদের বক্তব্য, মুম্বইয়ে সুশান্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কী হয়েছে না হয়েছে, সে ব্যাপারে বিহার পুলিশের তদন্তের এক্তিয়ার নেই। মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ারও বারবার দাবি উঠেছে কিন্তু তাতে কান দিচ্ছে না মহারাষ্ট্র সরকার।