দামাস্কাস : ফের একবার ভূমিকম্প ! ধ্বংসলীলা থামার লক্ষণ নেই তুরস্কে (Turkey EarthQuake)। এবার ৫.৫ মাত্রার কম্পন আছড়ে পড়ল। এবার মধ্য তুরস্কে। ইউরোপীয়ান-মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিকাল সেন্টারের ( European-Mediterranean Seismological Centre) তরফে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পের মাত্রা এবারে কম হলেও ক্রমাগত আফটারশকে কার্যত বিধ্বস্ত তুরস্ক। ক'দিন আগেই আবারও একবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল দেশটি। রিখটার স্কেলে যে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৪।


ভূমিকম্পের রেশ, যেন মহাপ্রলয় তুরস্ক-সিরিয়ায়


গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার ভয়াবহ ভূমিকম্পের একাধিক আঘাত আছড়ে পড়েছিল তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তের কাছে। তুরস্কের দক্ষিণভাগ সহ কার্যত গোটা দেশ ও সিরিয়ার এক বড় অংশ একাধিক ভূমিকম্পের জেরে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রথমে ৭.৮ , তারপর ৭.৬ ও যার পরে একে একে আরও তুলনামূলক কম তীব্র ভূমিকম্প আছড়ে পড়েছিল। এখনও পর্যন্ত শেষখবর পাওয়া পর্যন্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজারের কোটা ছাড়িয়ে গিয়েছে।


দক্ষিণ তুরস্কের ( Turkey  ) গাজিয়ানটেপ প্রদেশ ছিল ভূমিকম্পের উৎসস্থল ( Nurdagi city in the Gaziantep province )। একবার নয়, একটি ভূকম্পের পর আবার। ১০ মিনিট পরেই আফটার শক। দ্বিতীয়বার কম্পনের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭। একাধিক ভূকম্প অনুভূত হয় ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, লেবানন, সিরিয়াতেও প্রবল কম্পন অনুভূত হয়। তুরস্ক লাগোয়া সিরিয়ার ( Syria ) একাংশেও বহু বাড়ি ভেঙে পড়ে। ১৯৩৯ সালে শেষবার এমনই ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল তুরস্কে। সেবারও রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। 


প্রায় ৩০০ আফটারশক অনুভূত হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে


তুরস্ক আনাতোলিয়ান টেকটোনিক পাতের উপর অবস্থিত। ইউরেশিয়ান এবং আফ্রিকান পাতের মধ্যে আঁটোসাটো অবস্থান তার। উত্তরে রয়েছে আরবিয়ান প্লেট, তাতে আরও অবরুদ্ধ অবস্থান। ইউরেশিয়ান এবং আনাতোলিয়ান পাতের সংযোগস্থলে রয়েছে একটি ফাটল, যা নর্থ আনাতোলিয়ান ফল্ট লাইন হিসেবে পরিচিত, যা বিপর্যয় ডেকে আনে। নর্থ আনাতোলিয়ান ফল্ট ইস্তানবুলের দক্ষিণ থেকে তুরস্কের উত্তর-পূর্ব পর্যন্ত বিস্তৃত। অতীতেও এর কারণে একাধিক বার বিপর্যয় নেমে এসেছে। 


হারানোর যন্ত্রণা বুকে চেপেই তুরস্কে ফের নগরের পত্তন শুরু হল


বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্য়া ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর মধ্য়ে শুক্রবার সন্ধে পর্যন্ত তুরস্কের মৃতের সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজার ২১৮। ৫ হাজার ৯১৪ জন মারা গিয়েছেন সিরিয়ায়। দুই দেশ মিলিয়ে ১ লক্ষ ৬০ হাজারের বেশি নির্মাণ ভেঙে পড়েছে, যার মধ্যে ছিল ৫ লক্ষ ২০ হাজারের বেশি ফ্ল্যাট। তুরস্কের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ এই পরিসংখ্যান সামনে এনেছে।


আরও পড়ুন- বাতাসে শবের ঘ্রাণ, ৫০ হাজারের কোটা পার, খড়কুটো আঁকড়ে ফের উঠে দাঁড়াচ্ছে তুরস্ক