নয়া দিল্লি: রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ ও আগ্রাসনে ভারতের অবস্থান নিয়ে এবার কড়া বার্তা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে ভারতের যে প্রতিক্রিয়া তা ওয়াশিংটনের মিত্রদের মধ্যে একটি ব্যতিক্রম। অন্যদিকে, ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং প্রধান এশীয় অংশীদারদের সহ মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের প্রশংসা করেছেন। 


এদিকে, কোয়াড গ্রুপের বাকি সদস্য অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এঁদের বিপরীতে হেঁটেই ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে। এমনকী, রাষ্ট্রপুঞ্জে মস্কোর নিন্দা করে ভোটে যোগ দিতে অস্বীকার করেছে। ওয়াশিংটনে মার্কিন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের এক বৈঠকে ভাষণ দিতে গিয়ে বাইডেন বলেন, ন্যাটো এবং প্রশান্ত মহাসাগরে একটি ঐক্যফ্রন্ট ছিল।" মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায়, "কোয়াড গ্রুপের মধ্যে ভারতের অবস্থান বেশ নড়বড়ে। পুতিনের সঙ্গে আগ্রাসনের জন্য জাপান অত্যন্ত শক্তিশালী- অস্ট্রেলিয়াও আছে।"  


আরও পড়ুন, আদৌ যুদ্ধ সমাপ্তিতে আগ্রহী তো! সামনাসামনি পুতিনকে শুধোতে চান জেলেনস্কি


চলতি সপ্তাহের শুরুতেই একটি রুশ তৈল সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (Indian Oil Corporation), যার আওতায় রাশিয়ার থেকে ৩০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কেনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে (Crude Oil)। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের তুলনায় ভারতকে এই চুক্তিতে রাশিয়া মোটা অঙ্কের ছাড় (Russia Offers Discount to India) দিয়েছে বলেও খবর।


গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের (Russia Ukraine War) নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। তার পর থেকে এক মাস গড়াতে চললেও, যুদ্ধের গতি স্তিমিত হওয়ার লক্ষণ নেই। বরং আমেরিকা-সহ ইউরোপীয় দেশগুলির নিষেধাজ্ঞার ফাঁস যত চেপে বসছে গলায়, ততই যুদ্ধ নিয়ে অনড় অবস্থান তুলে ধরছে মস্কো। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলে কোণঠাসা হয়ে পড়া রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের এই চুক্তি যথেষ্ট অর্থবহ বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। যদিও এতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনায় যেতে নারাজ বিশেষজ্ঞ মহল। 


রাশিয়ার থেকে তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, সুরা, হিরে-সহ একাধিক পণ্যের আমদানি ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ করেছে আমেরিকা। রাশিয়াকে পুরোপুরি বয়কট করা অসম্ভব জেনেও ইউরোপীয় দেশগুলিকে সেই পথে হাঁটকে আহ্বান জানিয়েছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু ভারতের তরফে তেমন কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। তাই এই চুক্তি ঘিরে ভূ-রাজনৈতিক তরজা কাম্য নয় বলে মনে করছে দিল্লি।তাদের সাফ যুক্তি, আমেরিকার মতো দেশগুলিকে তেলের জন্য অন্য কারও উপর নির্ভর করতে হয় না। তাই তাদের পক্ষে নিষেধাজ্ঞা বসানো সহজ হলেও, অন্যদের পক্ষে তা মেনে চলা দুষ্কর।